শাকসু নির্বাচন: ভোটের দিন পিছিয়ে ২০ জানুয়ারি নির্ধারণ
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু)-এর নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত ১৭ ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে ভোটের তারিখ ২০২৬ সালের ২০ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে নির্ধারিত তারিখে হচ্ছেনা শাকসু নির্বাচন। রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে জরুরী এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান, শাকসু নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি জানান, নতুন তফসিল দ্রুতই ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের পরিবর্তিত সম্ভাব্য তারিখ ২০ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।তফসিলে কিছু পরিবর্তনের কারণেই নির্বাচনের তারিখ পিছিয়েছে বলে তিনি জানান।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার তফসিল মোতাবেক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আজ (রোববার) ছিল চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের দিন। গত ১৪ নভেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ১৭ ডিসেম্বর শাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন শাবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। আর ১৬ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. আবুল মুকিত মাহমুদ মোকাদ্দেছ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিলেন।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১৩ নভেম্বর রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান। পরদিন উপাচার্য ১৭ ডিসেম্বর তারিখ ঘোষণা করলে ছাত্রশিবির, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রমজলিশসহ চারটি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে।
এরপর থেকে নির্ধারিত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে প্রশ্ন জেগেছিল। শুধু তারিখ নিয়ে বিরোধ নয়, এর পেছনে গভীরতর রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশও রয়েছে কি না এমন প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ। ওই রাতেই উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য প্রায় ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন।
আন্দোলনকারীরা দাবি আদায়ের আশ্বাস পেয়ে ভোরে অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু একই রাতে হঠাৎ শীতকালীন ছুটি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নতুন করে শঙ্কা ছড়ায়। তারপরও নির্বাচন কমিশন ১৭ ডিসেম্বরের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রেখে তফসিল ঘোষণা করলে 'তারিখ এগিয়ে আনার' দাবিতে শিক্ষার্থীরা পুনরায় বিক্ষোভে নামেন।
এর বিপরীতে ছাত্রদল একই দিন উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিতে যুক্তি দিয়ে বলেছে, পরীক্ষা, ফিল্ডওয়ার্ক ও বিভাগভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বিবেচনায় নির্বাচন ডিসেম্বরের শেষ কিংবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হওয়া যুক্তিযুক্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ছাত্রদল নির্বাচন পেছানোর পক্ষে, আর ছাত্রশিবির ও সমমনা সংগঠনগুলো ৮-১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট চায়। এই বিপরীতমুখী অবস্থান শুধু বিভক্তিই নয়, নির্বাচনের নিরাপত্তা, নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও গভীর প্রশ্ন তৈরি করেছে।
Comments