ফরিদপুরে মহাসড়ক অবরোধে, দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিক্ষোভ - শিশুদের হাতেও রামদা!
লকডাউনকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে ফরিদপুরে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। এই সহিংস বিক্ষোভে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র হাতে সড়কের অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে এই অবরোধ চলায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যোগাযোগ পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শুয়াদী বাসস্ট্যান্ড ও পুখুরিয়া সহ কয়েকটি এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কের ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এ সময় শতাধিক স্থানীয় নেতা-কর্মী রামদা, ঢাল ও সরকি সহ দেশীয় অস্ত্র হাতে সড়কে অবস্থান করে।
অবরোধের সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিকটি ছিল বিক্ষোভে শিশুদের ব্যবহার। কমপক্ষে দশ জন শিশু হেলমেট মাথায় ও লাঠিসোঁটা হাতে মহাসড়কে অবস্থান নেয়। তাদের মধ্যে একটি শিশুর হাতে রামদা নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়, যা জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
সাড়ে চার ঘণ্টার অচলাবস্থার পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সকাল সোয়া দশটার দিকে অবরোধ সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হলে যানবাহন চলাচল পুনরায় শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান বলেন, "পুলিশ অবরোধ সরিয়ে নিতে নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়েছে। এখন সব রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।"
তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সকাল থেকে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল কেটে দিয়ে নিরবতা পালন করেন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও যাত্রী না থাকায় দূরপাল্লার বাস চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফরিদপুর বাসমালিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত তারা সকল পথে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে।
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, "সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
ফরিদপুর বাসমালিক গ্রুপের নেতা কামরুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, "আমরা বাস চালাতে চাই, তবে যাত্রী না পেলে তো যাত্রীশূণ্য অবস্থায় বাস চালানো সম্ভব নয়।"
Comments