মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে-জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতন
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আব্দুল করিম (৭৬) নামে অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সেনা সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মারধর ও পুলিশে সোপর্দ করার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ( ৫ নভেম্বর ) বিকালে এ ঘটনায় পাগলা থানা পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমকে মাদ্রাসা ছাত্রীর পিতার শাহীন ফকির নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ময়মনসিংহ জেলা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার পাগলা থানার মশাখালি ইউনিয়নের মুখী গ্রামের শাহ মিসকিন মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতা পরানোর ঘটনা মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
থানায় দায়ের করা মামলা, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মুখী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুল করিম ও একই গ্রামের ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রীর পিতা শাহীন ফকির প্রতিবেশী।
মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে এগারটার দিকে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম ভুক্তভোগি মাদ্রাসা ছাত্রীর বসত ঘরে প্রবেশ করে এবং একা পেয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে স্থানীয়রা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমকে আটক করে। পরে আটক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীর বাড়িতে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে ও মারধর করে। খবর পেয়ে পাগলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবারের লোকজন তাকে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মঙ্গলবার রাতে মাদ্রাসা ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমকে আসামী করে পাগলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। থানা-পুলিশ এই মামলায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমকে গ্রেফতার দেখায়।
মাদ্রাসা ছাত্রীর পিতা ও মামলা বাদী জানায়, আমার মেয়ে চলতি বছর দাখিল পরীক্ষায় পাশ করেছে। আমাকে খোঁজ করার নামে আমার বসত ঘরে ঢুকে আমার মেয়েকে একা পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে । এ কারনে তাকে আটক করে এলাকাবাসী উত্তম-মাধ্যম দিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আমি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করি।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে মুক্তিযোদ্ধাকে গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে কি না সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।
Comments