আওয়ামী লীগ-জাপাকে বাদ দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হবে না: জিএম কাদের

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে (জাপা) বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে তা নিরপেক্ষ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন থেকে বাদ দিলে দেশে অর্ধেক মানুষ নিয়ে নির্বাচন হবে। সেটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। শেখ হাসিনা প্রতিযোগী কমিয়ে দেওয়ার রাজনীতি করে সফল হয়নি। আপনারাও চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
শনিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, যেই ক্ষমতায় আসে পাওয়ার ছাড়তে চায় না। ইলেকশন ম্যানুপুলেট করতে চায়। দেশবাসী ম্যানুপুলেট ইলেকশন মানবে না। তারা অর্ধেক মানুষকে নিয়ে নির্বাচন করে নিজেরা ভাগ বাটোয়ারা করবেন, দেশকে ধ্বংস করবেন, এটি দেশবাসী মেনে নেবে না।
জাতীয় পার্টিকে দোসর বলে রাজনীতি থেকে দূরে ঠেলে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা তৈরির চেষ্টা চলছে। আমি নেতাকর্মীদের বলবো আপনারা জনসম্মুখে থাকুন। এসব পাঁয়তারা জীবন দিয়ে হলেও মোকাবিলা করতে হবে। যেখানে আমাদের বাধা দেওয়া হবে, সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
জিএম কাদের বলেন, জ্বিনের আছর, ভূতের আছরের মতো অনেকের ওপর ক্ষমতার আছর হয়েছে। ক্ষমতার আছর তাদের পাগল করেছে। ক্ষমতার নেশা তাদের পেয়ে বসেছে। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য তারা নানা পলিসি গ্রহণ করেছে। তাই দোসর আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টিকে রাজনীতি থেকে বের করে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। এতদিন আমরা এই কথার গুরুত্ব দেই নাই।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ২০১৪ সালের নির্বাচনকে বয়কট করেছিলাম। ২৭০ জন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিল। সেটি নিয়ে তো কেউ কথা বলে না। এরশাদকে স্বৈরাচার বলা হয়। এটি একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এরশাদকে স্বৈরাচার বলা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই নাই। স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যবধি সকল সরকার প্রধান স্বৈরাচার ছিলেন কম আর বেশি।
জিএম কাদের বলেন, সবাই জানে আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম। আমাদের অবদান সবাই জানে। কিন্তু এখন আমাদের মিটিং মিছিলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পার্টি অফিসে ভাঙচুর করা হচ্ছে। ইফতার মাহফিলে হামলা করা হচ্ছে। জনগণ যেন আমাদের ভুলে না যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ অকার্যকর হলে আমরা সেনাবাহিনীর ওপর ভরসা করি। মানুষ ভাবে কেউ না দেখলে সেনাবাহিনী দেখবে। এখন তাদের ডিস্টার্ব করা হচ্ছে। এটি জনস্বার্থের অনুকূলে নয়।
এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, অতিরিক্ত মহাসচিব মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির আহমেদ, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, দলের মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, পীরগঞ্জ উপজেলার সভাপতি নুরে আলম যাদু মিয়া, জাতীয় যুব সংহতির নেতা নাজিম উদ্দিনসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Comments