যে ৫ পানীয় আপনার লিভারকে ভালো রাখবে

বিশ্বব্যাপী লিভার রোগ বেড়ে চলেছে আশঙ্কাজনক হারে। প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ লিভারজনিত রোগে মারা যান, যা বৈশ্বিক মৃত্যুর প্রায় ৪ শতাংশ। অথচ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার আমাদের দেহে ডিটক্সিফিকেশন, বিপাকক্রিয়া ও পুষ্টি সঞ্চয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।
আধুনিক জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও স্থূলতা বৃদ্ধির কারণে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএলডি) ভয়াবহ হারে বাড়ছে। জীবনযাত্রার পরিবর্তনের পাশাপাশি কিছু পানীয় লিভার সুস্থ রাখতে সহায়তা করতে পারে। নিচে এমনই পাঁচটি পানীয় তুলে ধরা হলো, যা নিয়মিত গ্রহণে লিভার কার্যকারিতা উন্নত হতে পারে।
কফি
সকালের প্রিয় পানীয় কফি কেবল চাঙ্গা করেই না, বরং লিভারকেও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কফি পান লিভার ফাইব্রোসিস, ফ্যাটি লিভার ও এমনকি লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে। এতে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের কোষ রক্ষা করে এবং প্রদাহ কমায়। দিনে ২ কাপ ব্ল্যাক কফি (চিনি ছাড়া) গ্রহণে সুফল পাওয়া যায়।
গ্রিন টি
গ্রিন টি-তে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট 'ক্যাটেচিন' এবং 'ইজিসিজি' যা লিভারের জন্য উপকারী। এটি লিভারে চর্বি জমা রোধ করে এবং লিপিড বিপাক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। প্রতিদিন ১–২ কাপ গ্রিন টি পান করলে লিভারের প্রদাহ কমে এবং এনএএফএলডি প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত গ্রিন টি গ্রহণ থেকে বিরত থাকাই ভালো, কারণ এতে লিভারে অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।
বিটরুট জুস
রক্ত লাল করা বিটরুট জুস লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে কার্যকর। এতে থাকা বেটালেইনস ও নাইট্রেটস লিভার পরিষ্কারে সাহায্য করে এবং কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, বিটরুট জুস লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সপ্তাহে ১–২ দিন ১ গ্লাস বিটরুট জুস খাওয়া উপকারী হতে পারে।
লেবু পানি
গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে লেবু পানি খাওয়ার অভ্যাস লিভারকে সতেজ রাখে। এতে থাকা ভিটামিন সি ও সাইট্রাস ফ্ল্যাভোনয়েড লিভারের কোষ রক্ষা করে ও ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া সহজ করে। ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, লেবুর রস অ্যালকোহলের কারণে লিভারের ক্ষয় রোধে কার্যকর।
চা
সাধারণ চা বিশেষ করে ওলং চা ও ডার্ক চা লিভারের জন্য উপকারী। ২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, চা লিভারে ফ্যাট জমা প্রতিরোধ করে, প্রদাহ কমায় এবং হজমে সহায়তা করে। দিনে ১–২ কাপ চা খাওয়া যেতে পারে, তবে চিনি বাদ দিয়ে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
Comments