ভুল সময়ে দাঁত ব্রাশ করলে হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি

ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেই মুখে এক ধরনের অস্বস্তিকর অনুভব করেন। এর পেছনের মূল কারণ হলো মুখের ভেতরে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া, যা দাঁতে প্লাক তৈরি করে ও মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে। অনেকেই জানেন না দাঁত ব্রাশ করার সঠিক কোনটি। অনেকে ভাবেন নাশটার আগে আর কেঊ পরে ব্রাশ করাই সঠিক মনে করেন। তবে বিশেষজ্ঞরা মতে দাঁতের সঠিক যত্নে সকালে ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই ব্রাশ করাকে সবচেয়ে কার্যকর।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ ডেন্টিস্টের মতে, সকালে দেরি না করে দাঁত ব্রাশ করাই উত্তম। কারণ এতে মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর হয় এবং ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দাঁতের এনামেলের ওপরে একটি সুরক্ষাবলয় গঠন করে। এই সুরক্ষা স্তর নাশতার সময় খাবারে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান থেকে এনামেলকে রক্ষা করে।
ব্রাশ করার সময় লালার পরিমাণও বাড়ে, যা মুখের জীবাণু ধ্বংসে সহায়তা করে এবং হজম প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রাশ করার পর প্রায় পাঁচ মিনিট পর্যন্ত লালার নিঃসরণ বেড়ে যায়, যা দাঁতের সুস্থতায় সহায়ক। তবে অনেকে আছেন যারা নাশতার পরে দাঁত ব্রাশ করতে অভ্যস্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস একেবারে খারাপ নয়, তবে খাবার গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই ব্রাশ না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। বিশেষ করে টোস্ট, কমলা, কফি কিংবা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার পর দাঁতের এনামেল কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন ব্রাশ করলে অ্যাসিড দাঁতের ওপরে আরও ছড়িয়ে পড়ে এবং এনামেলের ক্ষতি হতে পারে।
আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন পরামর্শ দিয়েছে, নাশতার অন্তত ৩০ থেকে ৬০ মিনিট পরে ব্রাশ করতে। এর আগেই মুখ ধুয়ে নেয়া বা চিনিমুক্ত চুইংগাম চিবানো মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করতে পারে।
সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করার কিছু নিয়ম:
> ব্রাশটি সামান্য পানিতে ভিজিয়ে নিন
> মটর দানার সমান ফ্লোরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করুন
> দাঁতের রেখার ওপর কোণাকুণিভাবে ব্রাশ চালান
> দুই মিনিট সময় নিয়ে সামনের, পেছনের ও চিবানোর দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করুন
> জিহ্বাও ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করুন
> সবশেষে ভালোভাবে কুলি করুন
সকালের শুরুটা যদি হয় একগুচ্ছ পরিচ্ছন্নতা ও সতেজতার মাধ্যমে, তবে তা সারাদিনের সুস্থতার ভিত্তি গড়ে দেয়। তাই দাঁতের সুরক্ষায় সকালে ঘুম ভাঙার পরই ব্রাশ করাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। তবে সময়ের অভাবে নাশতার পরে ব্রাশ করলেও অন্তত ৩০ মিনিট অপেক্ষা করাই ভালো। আর দিনে একবারও ব্রাশ না করাটা হতে পারে সবচেয়ে ক্ষতিকর অভ্যাস—সকাল হোক বা রাত।
Comments