আজ চা-প্রেমীদের দিন
আজ ২১মে, বিশ্ব চা দিবস। আজকের দিনটি চা-প্রেমীদের জন্য। দিনটি উদ্যাপন করতে সবাই একত্রিত হয়ে মেতে উঠতে পারেন চায়ের আড্ডায়। নতুন-পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে একটা চা সন্ধ্যার আয়োজন হতেই পারে। মুসল বৃষ্টিস্নাত বিকেলে শুধু এক কাপ চায়ের জন্য অনেকে বাইরে ছুটে যান। এমন চা-প্রেমীদের সংখ্যা মোটেও কম না। জীবনে একবারও চা খাননি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ন্যাশনাল টুডের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রতি সেকেন্ডে মানুষ ২৫ হাজার কাপ চা পান করেন। অর্থাৎ প্রতিদিন দুই বিলিয়ন কাপেরও বেশি চা পান করা হয়।
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় 'চা'–কে কেন্দ্র করে চা শ্রমিক, উৎপাদনকারী এবং ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষার প্রত্যয়ে প্রতিবছর এই দিনটি পালিত হয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) ২০১৯ সালে ২১ মে তারিখকে আনুষ্ঠানিকভাবে 'বিশ্ব চা দিবস' হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে ভারতসহ কিছু দেশে ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ব চা দিবস পালিত হলেও জাতিসংঘের স্বীকৃতির পর থেকে ২১ মে পালন শুরু হয়।
বাংলাদেশ চা বোর্ড, বেসরকারি চা উৎপাদক সংগঠন এবং বিভিন্ন এনজিও আজকের দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, র্যালি, শ্রমিক সম্মেলন ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
বাংলাদেশে চা একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প। ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়ায় প্রথম চা বাগান স্থাপনের মাধ্যমে চা শিল্পের সূচনা হয়। বর্তমানে সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, পঞ্চগড় ও বান্দরবানসহ বেশ কিছু জেলায় চা উৎপাদন হচ্ছে।
দেশের চা শিল্পে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক সরাসরি যুক্ত, যাদের অধিকাংশই নারী এবং জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের অভাবসহ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এই শ্রমিকরা এখনও অনেকটাই অবহেলিত।
বিশ্ব চা দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এক কাপ চায়ের পেছনে রয়েছে হাজারো শ্রমিকের ঘাম, শ্রম ও ত্যাগ। তাই এই দিনটি শুধু উদযাপনের নয়, বরং চা শিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি নেয়ারও।
Comments