হঠাৎ করেই পা অবশ হয়ে যাওয়ার কারণ

অনেকের মধ্যেই দেখা যায় হঠাৎ করেই অবশ হয়ে গেছে পা। এ ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিয়ে থাকেন। মনে করেন কিছুদিন পর আপনাআপনিই ঠিক হয়ে যাবে। যদিও তা হয় না। কেউ কেউ আবার মনে করেন, হয়তো অনেক পরিশ্রম থেকে হঠাৎ এমন হয়েছে।
হঠাৎ পা অবশ হওয়ার মতো সমস্যা হলে বিষয়টি অবহেলা করা ঠিক নয়। এ সমস্যায় মনে করতে হবে, স্বাস্থ্যজনিত অন্তির্নিহিত কোনো সমস্যা রয়েছে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা থেকেও পা অবশ হওয়ার সমস্যা হয়। এটা ঘন ঘন হলে জটিল সমস্যা হতে পারে। যা কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা থেকে হতে পারে। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। এবার তাহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হলো-
ডায়াবেটিস এবং পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি: পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির জন্য প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। এটি এমন রোগ, যেখানে রক্তে উচ্চ শর্করার পরিমাণ স্নায়ুকে ধ্বংস করে দেয়। ডায়াবেটিস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রক্ত সরবরাহ ও স্নায়ুর কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত করে। যা থেকে পা অবশ হয়। কখনো কখনো ব্যথ্যাও হয়। এ জন্য নিউরোপ্যাথি প্রতিরোধে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
ভিটামিনের ঘাটতি: ভিটামিন বি১২ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ঘাটতি হলে স্নায়ু নষ্ট হয় এবং যা থেকে পা অসাড় হয়ে পড়ে। স্নায়ু সুস্থ রাখার জন্য ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় ভিটামিন পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ না করলে পা ঝিমঝিম করা, পেশী দুর্বলতা ও মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে।
মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (এমএস): ভারতের নয়ডার ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোলজির সহযোগী পরিচালক ডা. মণীশ গুপ্তের মতে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস স্নায়ুতন্ত্রকে টার্গেট করে। এটি এমন অটোইমিউন রোগ, যা স্নায়ু তন্ত্রের চারপাশের প্রতিরক্ষামূলক আবরণ ধ্বংস করে। আর স্নায়ু বার্তা ব্যাহত হলে হলে মানুষ তখন দুর্বল বা অবশ অনুভব করে। এ সময় পা নড়াচড়া করাতে অক্ষম হয়।
সায়াটিকা এবং হার্নিয়েটেড ডিস্ক: সায়াটিকা তখনই হয় যখন কোনো কিছু সায়াটিক স্নায়ুকে সংকুচিত করে। যা পিঠের নিচের অংশ থেকে পা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর সাধারণ কারণ হচ্ছে মেরুদণ্ডে ফুলে যাওয়া হার্নিয়েটেড ডিস্ক। স্নায়ু সংকোচনের কারণে এক বা উভয় পাই ব্যথা বা অবশ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে ব্যথা নিরাময় হতে পারে। একইসঙ্গে থেরাপি বা গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
স্ট্রোক এবং ক্ষণস্থায়ী ইস্কেমিক আক্রমণ (TIA): ছোটখাটো স্ট্রোক বা স্ট্রোক থেকেও পা অবশ হওয়ার সমস্যা হতে পারে। মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহ গ্রহণ না করলে স্ট্রোক হয়ে থাকে। পা অবশ বা কথা বলতে সমস্যা হলে, মাথা ঘোরা বা মুখ ঝুলে থাকলে অবিলম্বে হাসপাতালে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা গ্রহণে ভবিষ্যতের জটিল সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।
Comments