যে লক্ষণগুলো দেখে লিভারের সুস্থতা নির্ণয় করবেন
আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ যকৃত বা লিভার। এমনকি এটা পরিপাকতন্ত্রের প্রধান অঙ্গ। আমরা যা কিছু খাই বা পান করি, সব পরিপাক হওয়ার পর রক্তের মাধ্যমে বিপাকের জন্য লিভারে যায়। আর লিভারের প্রধান কাজ পুষ্টি উপাদানগুলো ভেঙে শরীরে এনার্জি বা শক্তি উৎপাদন করা এবং বাড়তি পুষ্টি উপাদানগুলো গ্লুকোজ আকারে সঞ্চিত করে রাখা। এমনকি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন ও রক্তের উপাদান লিভারে তৈরি হয়। তবে কিছু অভ্যাসের কারণে লিভাবে নানান সমস্যা হতে পারে। বর্তমানে লিভারের সবচেয়ে পরিচিত রোগের নাম ফ্যাটি লিভার।
ফ্যাটি লিভার রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায়ই কোনো লক্ষণ প্রকাশ করে না, ফলে এটি সহজে ধরা পড়ে না। তবে শুরুর দিকেই যদি লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা যায়, তাহলে বড় ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা এড়ানো সম্ভব। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে ভারতের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. সৌরভ সেঠি ৫টি সাধারণ লক্ষণের কথা উল্লেখ করেছেন। আর এই লক্ষণগুলো বলে দিবে ফুয়াতি লিভারে ভুগছেন কিনা।
১. পেটের চারপাশে অতিরিক্ত মেদ জমা
ফ্যাটি লিভারের সঙ্গে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের যোগসূত্র রয়েছে। আর এতড় জন্যই পেটের চারপাশে অতিরিক্ত মেদ জমে। এটি লিভারের কার্যকারিতার সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তাই পেটের মেদ দেখলেই সাবধান হতে হবে।
২. সারাক্ষণ ক্লান্তি বা অবসাদ
লিভার যখন তার স্বাভাবিক কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পাদন করতে পারে না, তখন শরীরে ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভূত হতে পারে। যদি কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে ক্লান্তি অনুভব করেন, তবে এটি ফ্যাটি লিভারের ইঙ্গিত হতে পারে। বর্তমান সময়ে অনেকেই অল্প কাজ করে হাঁপিয়ে যান আর এর প্রধান কারণ হতে পারে ফ্যাটি লিভার।
৩. ডান পাশের পাঁজরের নিচে ব্যথা বা অস্বস্তি
লিভার শরীরের ডান দিকে থাকে, তাই এই অঞ্চলে ব্যথা বা চাপ অনুভূত হলে, তা লিভারের প্রদাহ বা অতিরিক্ত চাপের লক্ষণ হতে পারে। যদি প্রতিদিন এই সমস্যা থাকে তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৪. ত্বকের সমস্যা
ফ্যাটি লিভারের কারণে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স দেখা দিতে পারে। যার ফলে ত্বকে ব্রণ, গাঢ় দাগ পড়া বা চুল পড়ার কারণ হতে পারে। এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যার বাহ্যিক লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায়। তাই হঠাৎ ত্বকে ব্রণ বা দাগ হলে সেটাকে স্বাভাবিকভাবে ধরে না নেয়াই ভালো। যদি কয়েক সপ্তাহ ত্বকের অবস্থা নাজুক থাকে তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৫. বমিভাব ও ক্ষুধামন্দা
যদি ঘন ঘন বমিভাব অনুভব করেন বা ক্ষুধা কমে যায়, তাহলে এটি ইঙ্গিত দিতে পারে যে লিভার তার কার্যকারিতা হারাচ্ছে। আর এ কারণে শরীর থেকে টক্সিন নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। টক্সিনের কারণেই বমিভাব বা ক্ষুধামন্দা হতে পারে।
যদি উপরের লক্ষণগুলোর মধ্যে কোনো একটি বা একাধিক লক্ষণ টের পান, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়েই সচেতন হলে ফ্যাটি লিভার রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং সুস্থ লিভার নিশ্চিত করা যায়।
Comments