বয়স বাড়লেও তারুণ্য ধরে রাখবে যেসকল খাবার
আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে খাবারের গুণগত মান আমাদের ফিটনেস, চেহারা, জীবনমান এবং রোগ প্রতিরোধের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেল। শরীরের প্রাকৃতিক বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। কিছু পুষ্টি ত্বকের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারে এবং বয়সের লক্ষণগুলো ধীর করতে পারে।
পুষ্টিকর খাবার আপনার তারুণ্য ধরে রাখবে সেই সঙ্গে সুস্থ রাখবে। হেলথলাইনের প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা ৯টি খাবারের কথা বলেছে যা বার্ধক্যে দূরে রাখবে। খাদ্যতালিকায় যে ধরণের রাখতে হবে :
- স্বাস্থ্যকর প্রোটিন
- স্বাস্থ্যকর চর্বি
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার
এছাড়াও সুস্থ বার্ধক্যের জন্য সহায়ক ৯টি পুষ্টিকর খাবার তুলে ধরা হলো:
১. এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
বিশ্বের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর তেলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ যা প্রদাহ এবং ফ্রি র্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ ক্ষতি কমাতে সহায়তা করে। এটি হৃদরোগ, টাইপ-টু ডায়াবেটিস, এবং ক্যান্সারের মতো দীর্ঘমেয়াদী রোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ত্বকের বার্ধক্য কমাতে কার্যকর।
২. গ্রিন টি
গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা ফ্রি র্যাডিক্যালকে স্থিতিশীল করে, ফলে ত্বকের ক্ষতি রোধ করে। এটি ত্বকের বার্ধক্য এবং হৃদরোগসহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৩. চর্বিযুক্ত মাছ
স্যামন বা সার্ডিনের মতো চর্বিযুক্ত মাছ দীর্ঘ চেইনের ওমেগা-থ্রি ফ্যাট, প্রোটিন এবং সেলেনিয়ামে সমৃদ্ধ, যা ত্বকের মসৃণতা এবং স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
৪. ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকলেটে থাকা ফ্ল্যাভোনল ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা দিতে পারে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। তবে ৭০ শতাংশ বা তার বেশি কোকো যুক্ত ডার্ক চকলেট বেছে নিন।
৫. শাকসবজি
গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক, এবং ব্রকলির মতো সবজিগুলো ভিটামিন সি এবং বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ, যা ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং সূর্যের ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। তাই নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে।
৬. ফ্ল্যাক্সসিড
ফ্ল্যাক্সসিডে অ্যালফা-লিনোলেনিক অ্যাসিডএবং লিগনান রয়েছে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে। তাই ফ্ল্যাক্সসিড খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। ২০০৯ থেকে ২০১১ সালে পর্যন্ত একটি গবেষণা করা হয়। ঐ গবেষণায় দেখা গেছে , যে নারীরা ১২ সপ্তাহ ধরে তিসির বীজ বা তিসির তেল গ্রহণ করেছিলেন তাদের ত্বকের আর্দ্রতা বৃদ্ধি এবং ত্বক মসৃণ ছিল।
৭. ডালিম
ডালিম পুষ্টিতে ভরপুর ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন কে থাকে, যা সুস্থ হৃদরোগ থেকে সুরক্ষা দেয়। এছাড়াও ডালিমের বীজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোলাজেন রক্ষা করে এবং নতুন কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে।
৮. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ত্বকের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে এবং ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে উদ্ভিদ-ভিত্তিক চর্বি সমৃদ্ধ খাবার বয়স্কদের ত্বকের উন্নতি করে। তাই তারুণ্য ধরে রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অ্যাভোকাডো রাখতে পারেন।
৯. টমেটো
আমাদের ত্বকের জন্য টমেটো দারুণ উপকারী। টমেটোতে থাকা লাইকোপেন সূর্যের ইউভি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে। সেই সঙ্গে আনইভেন টোনের সমাধান টমেটো।
আপনার খাদ্যতালিকা বার্ধক্য প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলে। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ খাবার বার্ধক্যজনিত পরিবর্তন কমাতে সহায়তা করতে পারে। এর পাশাপাশি সানস্ক্রিন ব্যবহার, ধূমপান এড়ানো এবং সক্রিয় জীবনযাপন বার্ধক্য রোধে ভূমিকা রাখে।
Comments