ঘরের ভেতরে খালি পায়ে নাকি স্যান্ডেল পরে হাঁটবেন?

অনেকে ঘরের ভেতর স্যান্ডেল পরে হাঁটেন। আবার অনেকে গরমকালে খালি পায়েই হাঁটতে পছন্দ করেন। এই দুই অভ্যাসেরই আলাদা আলাদা প্রভাব আছে শরীরের ওপর। স্যান্ডেল পরে ঘরের ভেতর হাঁটা-চলা করলে শীতকালে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। বিশেষ করে বেশি বয়সীদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অভ্যাস। কিন্তু এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব আছে। 

ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, খালি পায়ে হাঁটার অনেক উপকারিতা আছে। তবে সবকিছুর মতো খালি পায়ে হাঁটারও সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই আছে। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কারও কারও ক্ষেত্রে ঘরের মধ্যেও খালি পায়ে হাঁটা উচিত নয়। এতে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কাদের ক্ষেত্রে এমন মনে করা হয়?

হাঁটু বা পিঠে ব্যথা থাকলে:

খালি পায়ে হাঁটলে পায়ের 'ফাংশন' বাধাপ্রাপ্ত হয়। খালি পায়ে হাঁটার অভ্যাস হাঁটু ও পিঠে ব্যথার কারণ হতে পারে। এমনকি পায়ের বায়োমেকানিকাল ফাংশনও ঝামেলায় পড়ে। শক্ত মেঝেতে খালি পায়ে হাঁটার ফলে পা'সহ শরীরের বাকি অংশে প্রচণ্ড চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন খালি পায়ে হাঁটার কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথাও হতে পারে।

৫০ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের :

মধ্যবয়সী নারীদেরও বাড়িতে খালি পায়ে হাঁটা অনুচিত। এর কারণ নারীদের বয়স ৫০ বছর পার হলে তাদের পায়ের তলার চর্বিযুক্ত প্যাড নষ্ট হতে থাকে। ফলে এ সময় খালি পায়ে হাঁটলে হাঁটু, নিতম্ব ও শরীরের নিচের পিঠে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভারসাম্যহীনতার সমস্যা থাকলে :

শক্ত মেঝেতে খালি পায়ে হাঁটার ফলে সৃষ্ট ভারসাম্যহীনতার কারণে পায়ের অন্তর্নিহিত বিকৃতি ঘটতে পারে। পায়ের নানা বিকৃতি আপনাকে গোড়ালির ব্যথা, পোস্টেরিয়র টিবিয়াল টেন্ডোনাইটিস ও অ্যাকিলিস টেন্ডোনাইটিসের মতো সমস্যায় ফেলতে পারে।

সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে :

খালি পায়ে হাঁটলে পা খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংস্পর্শে আসে। যা আমাদের ত্বক ও নখকে সংক্রমিত করতে পারে। জীবাণুরা প্রথমে ত্বক ও পরে নখকে সংক্রামিত করে। এরপর পায়ের আঙুল ও ত্বকে ব্যথা হয় ও ত্বকে ফাটল ধরে।

ডায়াবেটিস থাকলে :

ডায়াবেটিস থাকলে খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি করা উচিত নয়। ছত্রাকের মতো ত্বকের সংক্রমণ ডায়াবেটিস রোগীর হাইড্রেশনকে প্রভাবিত করতে পারে। যা ত্বকের টেক্সচার, টোন পরিবর্তন করে এবং অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাই বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়ে। সংক্রমণ গুরুতর হলে অঙ্গচ্ছেদও করতে হতে পারে।

তবে খালি পায়ে হাঁটা সবসময় খারাপ নয়। কার্পেট, ঘাস বা বালির ওপর খালি পায়ে হাঁটা অনেক উপকারী। কিন্তু শক্ত মেঝেতে সেটি কাজের নয়। আর যেকোনো সমস্যায় সব সময়েই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াটা জরুরি।