সারাদিন ক্লান্ত বোধ করেন? জেনে নিন এর পেছনের কারণ
সারাদিন কাজ করার পর ক্লান্তি বোধ করা জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। অফিস, বাসা, নিজের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমরা ক্লান্ত হয়ে যাই। বর্তমান সময়ে দেখা যায় অনেকেই প্রায় সবসময় ক্লান্তি বোধ করেন। এমনকি ছুটির দিনে বাসায় থাকলেও আমরা আজকাল হাঁপিয়ে যাই। বর্তমান সময়ে ক্লান্তি বোধ করার এই বিষয়টা কি কেবল শারীরিক নাকি এর সঙ্গে আমাদের মানসিক বিষয়ও জড়িত। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়টা নিয়ে একাধিক গবেষণা করেছেন। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিষয়টি।
ব্রিটিশ সাইকোথেরাপিস্ট ও লেখিকা মোয়া সার্নার প্রতিবেদনটিতে বিস্তারিত কথা বলেছেন। তিনি ক্লান্তি বোধ করার পেছনে কারণগুলো তুলে ধরেছেন। মোয়া বলেন, সকালে উঠে অফিস, সংসার সামলানো, আর্থিক চাপ সামলানো কিংবা মানসিক সমস্যার সঙ্গে লড়াই সবমিলিয়ে আমরা যেন ক্লান্তির এক অসীম চক্রে বন্দী। আর এটা কেবল শারীরিক ক্লান্তি বোধ নয় এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরও জটিল কিছু।
মোয়া সার্নার বলেন, ক্লান্তির প্রকারভেদ আছে। কিছু ক্লান্তি বিশ্রাম নিলে কাটিয়ে উঠা যায়। তবে বর্তমান সময়ে অনেকেই বলেন বিশ্রাম কিংবা ঘুমের পরেও অনেকের ক্লান্তি কাটে না। কারণ এই ক্লান্তি বোধ আসে আবেগ ও মানসিক দিক থেকে। নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে রাখতে আমরা হাঁপিয়ে উঠি যায় প্রকাশ পায় ক্লান্তির মাধ্যমে।
এই মানসিক ক্লান্তির উদাহরণ হিসেবে সার্নার তার সাইকোথেরাপি সেশনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি দেখেছি অনেকেই নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যান। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো নিজের অনুভূতিগুলোকে বুঝতে চেষ্টা করা এবং সেটা প্রকাশ করা।
তিনি বলেন, নিজের রাগ, দুঃখ, লজ্জা, বা ভয়কে চেপে রাখা আমাদের মনের ভেতর এক ধরনের শূন্যতা তৈরি করে। এই শূন্যতা আমাদের আরও বেশি ক্লান্ত করে। এই অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে পারলে, মানসিক ক্লান্তি দূর হয়, আমরা আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠি।
সার্নার আরও বলেন, নিজের আবেগকে স্বীকার করতে শেখা সময়সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু এটা আমাদের মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তি দেয়। ক্লান্ত হওয়া সহজ, কিন্তু এই ক্লান্তিকে দূর করতে হলে নিজের মনে কথা বুঝতে হবে। শারীরিক বিশ্রামের পাশাপাশি মানসিক বিশ্রামও যে গুরুত্বপূর্ণ এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।