সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি’র ১০টি দাবি

মনোনয়নপত্র সশরীরে জমা দেওয়া, দল নিবন্ধন নবায়ন, দল নিবন্ধনের সময় বাড়ানো, ঋণখেলাপি ও হলফনামায় ভুল তথ্য দিলে সদস্যপদ বাতিলসহ অন্তত ১০টি দাবি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে তুলে ধরেছে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে যেন মিল থাকে, সে বিষয়টি সিইসির নজরে আনা হয়। সংশ্লিষ্টি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার সিইসির সঙ্গে এনসিপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল ২ ঘণ্টার মতো বৈঠক করে। বৈঠকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনূভা জাবীন।
বৈঠক শেষে এনসিপির সার্বিক আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তিনি বলেন, 'সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা অনেক কথা ইসি থেকে শুনতে পাই। যেগুলো আমাদের প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুনিনি। রোডম্যাপের কথা শুনিনি, ইসি থেকে এসেছে। এ জন্য আমরা বলব, কোনো জায়গায় কথা বলার জন্য ইসি নিজেদের জায়গায় সতর্ক থাকবে।'
প্রধান উপদেষ্টা যে কথা বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন—ইসি সে বিষয়ে কাজ শুরু করতে পারে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন বলেন, 'কিন্তু রোডম্যাপ বা সরকার থেকে কোনো দিকনির্দেশনা আসার আগেই যখন তাঁরা নিজেদের থেকে কথা বলেন, সেজন্য আমরা সন্দেহ পোষণ করি।'
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক জানান, 'সংস্কারের মাধ্যমে যেন নতুন নির্বাচন আসে, ইসি যেন সেদিকে ধাবিত হয়—জনদাবির মুখে সেটা যেন হয় তা জানিয়েছি। ১৭ এপ্রিলের চিঠিতে সংস্কারের বিষয়গুলো ফোকাস করা হয়েছে।'
এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপি নেতা বলেন, '(সিইসি ও ইসি নিয়োগ) ২০২২-এর আইন রয়েছে আমরা আগে জানিয়েছিলাম, আইনটা অবৈধ। অন্যান্য দলও জানিয়েছে অবৈধ। সে আইনের অধীনেই হয়েছে বর্তমান (ইসি)। আমরা এই আইনের বিরোধিতা করি। কিন্তু এখন যাঁরা আছেন, তাঁদেরকে সংস্কারপ্রক্রিয়ার মধ্যে নিতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্ট আসার পর তাঁরা থাকতে পারলে থাকবেন; না থাকতে পারলে থাকবেন না। এটা ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্টের ওপর নির্ভর করবে।'
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে এনসিপি। এ বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ঐকমত্য কমিশনের রিপোর্ট যখন ফাইনাল হয়ে আসবে, তখন সরকার প্রতিটি সাংবিধানিক কমিশনে পাঠাবে। ওই সিদ্ধান্ত যেন বাস্তবায়ন হয়।
নির্বাচনী মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কথা উল্লেখ করে এনসিপি নেতা বলেন, 'অতীতে অনেক প্রার্থী ঋণখেলাপি হয়েও ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। তাই হলফনামা বিশ্বাসযোগ্য কি না, তা তদন্ত করে মামলার মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য বলেছিলাম। তাঁরা বিষয়টিতে সম্মত হয়েছেন।'
Comments