প্রস্তুত আশ্রয় কেন্দ্র; আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে লোকজনের অনীহা

বান্দরবানের গতকাল রাত থেকে টানা বৃষ্টি আবার থেমে থেমে অতিভারী বৃষ্টিবর্ষণ শুরু হয়েছে। টানা ভারী বর্ষণের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পাহাড়ের পাদদেশ। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সতর্ক করতে শহরে প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। তবে বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনীহা দেখাচ্ছেন ঝুকিঁপূর্ণ পাহাড়ের বসবাসরত এলাকার বাসিন্দারা।
প্রশাসন জানিয়েছে, বান্দরবানে সদরসহ সাত উপজেলায় ২২০ টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত হয়েছে। তারমধ্যে বান্দরবান সদর উপজেলায় ৪৬টি, রুমা উপজেলায় ২৮টি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৯টি, থানচি উপজেলায় ১৫টি, লামা উপজেলায় ৫৫টি, আলীকদম উপজেলায় ১৫টি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৪২টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেই সাথে যেকোন দূর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ভোর সকাল থেকে কখনো থেমে আবার অতিভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কিছু কিছু নিমাঞ্চল এলাকা্র প্লাবিত হয়েছে। কোথাও পাহাড় ধ্বসে বাড়িঘরে মাটি ঢুকে পড়েছে। ফলে যারা ঝুকিঁপূর্ণ স্থানে পাহাড়ে বসবাস করছে সেসব লোকজনের মাঝে আতংঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাছাড়া গত এক দশকে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধ্বসে ঘটনায় প্রায় হারিয়েছে অন্তত ১০৫ জনের অধিক।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় বান্দরবানে সর্বমোট বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে ২০৩ মিলিমিটার। অতিভারী বর্ষণে কারণে বান্দরবানসহ চারটি পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভুমিধ্বসে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বেশ কিছু এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক বিপদ সংকেট দেখানো হয়েছে।
বান্দরবানে শহরে আর্মি পাড়া, বালাঘাটা আমবাগান পাড়া, লেমুঝিড়িসহ যেসব নিম্নাচল বাড়িঘর রয়েছে সেসব এলাকায় বেশ কিছু বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। টানা বর্ষণ থাকার ফলে বান্দরবানের শঙ্খ নদী ও মাতামূহুরী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। শঙ্খ নদীর ঘেষে উঠা বসতঘরগুলো কিনারায় পৌছেছে পানি। সেসব ঘরে থাকার জিনিসপত্র নিয়ে আগাম আশ্রয় কেন্দ্র যাওয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে অনেকেই।
বনরুপা, বীর বাহাদুর নগর ও আর্মি পাড়া বাসিন্দা মনজেল আলম, খুরশিদা আক্তার ও মর্জিনা বলেন, সামান্য কিছু টাকা দিয়ে জায়গা কিনে পাহাড়ে উপর ঘর করেছি। সমতলে কেনার সামর্থ্য আমাদের সাধ্য বাইরে। তাই বৃষ্টি হলে পাহাড় ধ্বসে আতঙ্ক নিয়ে রাত জেগে থাকি এছাড়া আমরা যাবোই কোথায়। আর ম্যাক্সি খাল ছোট্ট হওয়াই অল্প বৃষ্টি হলে ঘরে ভিতর পানি ঢুকে জলাবদ্ধরা তৈরী হয়। তাছাড়া খাল দখল করায় এই সমস্যা পড়তে হচ্ছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আগের তুলনা বেড়ে গেছে। সেই অনুসারেই বন্যায় প্লাবিত এলাকা ও ভূমি ধসের ঘটনা যেখানে ঘটেছিল সেগুলোকে ফোকাস করে একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
Comments