শেরপুরে হাতির আক্রমণে দুই জনের মৃত্যু

ভারত সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে আবারো বন্য হাতির আক্রমণে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০মে মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের দরবেশতলা নামক এলাকায় ভ্যান চালক মো. আজিজুর রহমান আকাশ (৪০) এর মৃত্যু হয়। এর দুই ঘণ্টা পর রাত দশটার সময় এফিলিস মারাক (৫২) নামে এক সিএনজি চালকের মৃত্যু হয়। আকাশ কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও এলাকার মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে এবং এফিলিস মারাকক গজনী এলাকার সহেন সিমসাং এর ছেলে।
আকাশের নিকটাত্মীয় মো. দুলাল মন্ডল (স্ত্রীর বড় ভাই) জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে সীমান্তবর্তী এলাকায় ২০-৩০টি হাতির একটি দল ধানখেতে নেমে আসে। ফসল রক্ষায় এলাকার মানুষ হাতি তাড়াতে লাঠি নিয়ে হাতিকে ধাওয়া করেন। এ সময় আকাশ হাতির খুব কাছাকাছি চলে যান। পরে একটি হাতি তাকে ধাওয়া দিয়ে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় দেয়। এসময় তার মাথা ও পেটে বিভিন্ন অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। পরে লোকজনের ধাওয়া খেয়ে হাতির দল সরে যাওয়ার পর স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সিএনজি চালক এফিলিস মারাক সিএনজি চালানো শেষে বাড়ী ফেরার সময় স্থানীয় আরও তিন জনকে নিয়ে আসছিল। বাড়ীর কাছাকাছি এলে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা হাতীর পালের কবলে পরে। সাথের তিন জন দৌড়ে পালিয়ে গেলেও এফিলিস মারাক পালাতে পারেনি। হাতির দল থেকে একটি হিংস্র হাতি তাকে সুড় দিয়ে পেচিয়ে আছাড় দিলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এসময় তারা শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান জানান, প্রতিবছর এভাবে হাতির আক্রমণে মানুষের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে প্রকল্প বাস্তবায়নে আশ্বাস শুনতে শুনতে যুগ যুগ কেটে গেলো। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তার পরিবারের পাশে দাঁড়াবো।
ঝিনাইগাতী উপজেলা বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, হাতির আক্রমণে মৃত্যু হলে বন বিভাগ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। আমরা পরবর্তীতে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরকারি সহায়তা প্রদানে সহযোগিতা করবো।
এ ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল-আমীন বলেন, ওই অটোভ্যান চালকের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও এফিলিস মারাকের লাশ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যুর দুইটি মামলা দায়ের করা হবে।
Comments