পাকিস্তানকে হারিয়ে উদ্বোধনী ম্যাচে জিতল নিউজিল্যান্ড

দীর্ঘ ২৯ বছর পর আইসিসির কোনো আসর বসেছে পাকিস্তানে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে পাকিস্তানও যেন ফিরে এলো ক্রিকেটের নতুন জগতে। তাইতো সে দেশের ক্রিকেট ভক্তদের আনন্দটা বাঁধভাঙা। কিন্তু পাকিস্তানিদের সেই আনন্দ মলিন করে দিলো নিউজিল্যান্ড। মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিকদের ৬০ রানের ব্যবধানে হারিয়ে শুভসূচনা করলো কিউইরা।
করাচি স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে শুরু করেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার উইল ইয়ং ও ডেভন কনওয়ে। ৭৩ রানেই টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে ব্ল্যাকক্যাপসরা। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে এগোতে থাকেন উইল ইয়ং। শেষ পর্যন্ত খেলেন ১০৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। পাঁচে নেমে সেঞ্চুরি হাঁকান টম লাথামও। দুই ব্যাটারের হার না মানা সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩২০ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে তেমন একটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি পাকিস্তান। ৪৭.২ ওভারে ২৬০ রানেই থামে পাকিস্তানের ইনিংস। আর তাতেই ৬০ রানের বড় জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল ধীরগতির। সৌদ শাকিল ১৯ বল খেলে ৬ রান করেই ফেরেন সাজঘরে। ও'রোর্কের বলে ম্যাট হেনরির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ওপেনার।
মোহাম্মদ রিজওয়ানও থিতু হতে পারেননি উইকেটে। ও'রোর্কের বলটা ফিল্ডারের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে থাকা ফিলিপস লাফিয়ে দারুণ একটি ক্যাচ ধরেন। রিজওয়ান বিদায় নেন ১৪ বলে ৩ রান করে।
ফখর জামান থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ৪১ বলে ২৪ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান ব্রেসওয়েল। সালমান আগা এদিন ব্যাটিং করেছেন কিছুটা টি-টোয়েন্টি মেজাজে। ২৮ বলে ৪২ রান করে নাথান স্মিথের বলে ব্রেসওয়েলের হাতে ক্যাচ হয়ে ফেরেন এই ব্যাটার।
তাহির ফেরেন ১ রান করেই। স্যান্টনারের বলে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ব্যাটার। এক প্রান্ত আগলে রেখে এগোতে থাকা বাবর আজমকে থামান স্যান্টনার। ৯০ বলে ৬৪ রান করা বাবর আউট হন উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
শাহীন আফ্রিদি ১৩ বলে করেন ১৪ রান। অন্যদিকে একাই দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন খুশদিল শাহ। তবে তাকে শেষ পর্যন্ত থামতে হয়েছে ৬৯ রানে। ও'রোর্কের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ব্রেসওয়েলের হাতে ধরা পড়েন এই ব্যাটার।
এরপর ১০ বলে ১৯ রান করে ফেরেন হ্যারিস রউফ। নাসিম শাহ আউট হন ১৫ বরে ১৩ রান করে। শেষ পর্যন্ত ১৬ বল বাকি থাকতে ২৬০ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের হয়ে মিচেল স্যান্টনার ও ও'রোর্কে নেন ৩টি করে উইকেট।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে দেখেশুনেই খেলছিলেন দুই কিউই ওপেনার উইল ইয়ং ও ডেভন কনওয়ে। দুজনের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৩৯ রান। অষ্টম ওভারে আবরার আহমেদের বলটা যেন বুঝে উঠতে পারলেন না কনওয়ে। বোল্ড হয়ে ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ১০ রান।
স্কোরবোর্ডে আর এক রান যোগ হতেই কেইন উইলিয়ামসনের উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ২ বলে ১ রান করে নাসিম শাহ'র বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
ড্যারিল মিচেল থিতু হয়েও লম্বা করতে পারেননি তার ইনিংস। ২৪ বল খেলে মাত্র ১০ রান করেই আউট হয়েছেন তিনি। হ্যারিস রউফের বলে পুল শট খেলতে গিয়ে শাহীন আফ্রিদির হাতে ধরা পড়েন এই ব্যাটার।
সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ওপেনার উইল ইয়ং। নাসিম শাহ'র বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগ অঞ্চলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। অনেক খানি দৌঁড়ে এসে বলটি তালুবন্দি করেন বদলি ফিল্ডার ফাহিম আশরাফ। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১১৩ বলে ১০৭ রান।
এরপর গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে এগোতে থাকেন টম লাথাম। ইয়ংয়ের পরে ৯৫ বলে ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরির দেখা পান লাথাম। সেঞ্চুরির পথে ৯টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান এই ব্যাটার।
ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতে আউট হন ফিলিপস। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৯ বলে ৬১ রান। দুজনের জুটি থেকে আসে ৭৪ বলে ১২৫ রান। লাথাম অপরাজিত থাকেন ১১৮ রানে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২০ রানের বড় সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের হয়ে নাসিম শাহ হ্যারিস রউফ নেন ২টি করে উইকেট। আবরারের শিকার ১ উইকেট।
Comments