পতনমুখী বাজারে বেড়েছে বাজার মূলধন
পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে আবার পতন হয়েছে। আগের সপ্তাহে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির শেয়ার কেনার খবরে বাজার চাঙ্গা হলেও পরের সপ্তাহে বিক্রির চাপে পতন হয় বাজারে। দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের অভাবেই বাজার ভালো অবস্থানে যেতে পারছে না। কারণ সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারের দাম সামান্য বৃদ্ধিতে গত সপ্তাহে বিক্রির প্রবণতা বেড়ে যায়। এতে করে পতন নেমে আসে বাজারে। তবে গত সপ্তাহে বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের কেনা-বেচা বৃদ্ধির কারণে বাজার মূলধন বাড়তে দেখা গেছে।
গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৪৬টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১০১টির। কমেছে ২৫০টির। অপরিবর্তিত ছিল ৪৫টির দর। কমেছে সবকটি মূল্য সূচক ও দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৫৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৫৫ কোটি টাকা বা দশমিক ১৪ শতাংশ।
বাজার মূলধন বাড়লেও কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ৩৭ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১১৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১১ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি বাড়ে ৫৬ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশ। ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও কমেছে দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি বাড়ে ২৭ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ।
পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে ২৯৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৭৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। গড় লেনদেন কমেছে ৭৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা ২১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। শেয়ারটি প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৬২ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবি'র শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিকন ফার্মা, জিপিএইচ ইস্পাত, ফাইন ফুডস, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং আইসিবি।সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে জেড ক্যাটাগরির শার্প ইন্ডাস্ট্রিজ। লুজার তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে বি ক্যাটাগরির এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল লিমিটেড।
অপর শেয়ারবাজার চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩৮৮ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া ২৯৬ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ১৭২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির দর। প্রধান সূচক সিএসসিএক্স কমেছে দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং সিএএসপিআই কমেছে দশমিক ৬০ শতাংশ। সিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্কয়ার ফার্মা, এমজেএল বাংলাদেশ, দি সিটি ব্যাংক, পুবালী ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক।