হাত-পা কেটে হলেও বের করুন
এপ্রিল ২৪, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: ‘আমার পা কেটে বাহির কর, আমি আর সইতে না…’ ধ্বংসস্তুপের ভেতর শোনা যাচ্ছে এক নারীর এমন আর্তনাদ। গার্মেন্টসের এ নারী চাপা পড়ে আছেন ভেঙ্গে পড়া বিশাল এক দেয়ালের মাঝে। তার এই আর্তনাদ শুনে যে কোন মানুষ জীবন দিয়ে হলেও বাঁচানোর চেষ্টা করবে। চেষ্টাও চলছে। কিন্তু কিছুই করার নেই উদ্ধারকারীদের।
বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় ধসে পড়া ভবনের পেছনের দিকে গিয়ে দেখা গেছে, এ নারীর বাম পায়ের হাটুর উপরে একটি বড় দেয়াল। ভালোভাবে মাথা উচু করতে পারছেন না কারণ আরেকটু উপরে ধসে পড়া আরেকটি দেয়াল। সারামুখ তার কংক্রিটের ধুলোয় ঢাকা। কখনো একটু উঠে বসেন। কখনো আবার শুয়ে পড়েন। এক তীব্র যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছেন এ নারী।
এই নারীর সঙ্গে আটকে পড়া চার নারীর মধ্যে দুজন মারা গেছে। আটকে পড়া এ্রই নারী বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে ২ জন মারা গেছে, আমরা এখনো বাইচা আছি। আমাদের ৪ জনের মধ্যে ২ জনের পায়ের ভেতর দিয়ে একদিক দিয়ে রড় ঢুকে আরেক দিয়ে বাহির হইয়া গেছে। আমাদের হাত পা কেটে হলেও বাহির করুন।’’
ধসে পড়া রানা প্লাজা ভবনে চারটি গার্মেন্টস কারখানায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার কর্মী কাজ করেন। মঙ্গলবার ফাটল ধরার পরও বুধবার সকালে কারখানায় কাজ চলছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ছাড়াও সেনাবাহিনীর চারটি দল এবং বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন।
ভবনটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার, প্রসাধন সামগ্রী ও কাপড়ের মাকের্ট এবং ব্র্যাক ব্যাংকের একটি শাখা ছিল।
আর তৃতীয় তলার নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড, চতুর্থ তলার ফ্যান্টম এ্যাপারেলস লিমিটেড, পঞ্চম তলার ফ্যান্টম ট্যাক লিমিটেড ও ষষ্ঠ তলার ঈথার টেক্সটাইল লিমিটেডের কারখানা।
ঢাকা জার্নাল: ১৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৩