পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে আ.লীগ থেকে বহিষ্কার

ডিসেম্বর ২, ২০১৫

AL_Logoঢাকা জার্নাল: পৌরসভা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মেয়র পদে দল মনোনীত প্রার্থীর বাইরে কেউ নির্বাচন করলে তাকে বহিষ্কার করবে আওয়ামী লীগ। এ ব্যাপারে দলটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে ২৩৫টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। ১৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। বুধবার দলের মনোনীত সক মেয়র প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত চিঠি দেয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এটা স্থানীয় নির্বাচন হলেও এই নির্বাচন দল ও সরকারের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এবার নির্বাচন হচ্ছে দলীয় প্রতীকে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে প্রতীকের সঙ্গে। তাছাড়া বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে দলের বিজয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ আগে থেকেই একক প্রার্থীর উপর গুরুত্ব দিয়েছে। সে অনুযায়ী একক প্রার্থী নিশ্চিত করা হয়েছে। এরপরও দলের প্রতীক নিয়ে যিনি নির্বাচন করবেন তার বিপরীতে দলের অন্য কোনো প্রার্থী দাঁড়ালে বা বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দলীয় প্রার্থীর বিজয় কঠিন হয়ে পড়বে বলে দলের নীতিনির্ধাকরা মনে করেন। এ কারণেই কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। প্রয়োজনে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে ওই নেতারা জানান। ১৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরপর কেউ প্রত্যাহার না করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত সোমবার( ৩০ নভেম্বর ) ও মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন বোর্ড বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, অধিকাংশ পৌরসভা থেকে একাধিক প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়। পৌরসভা আওয়ামী লীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় দলীয় সংসদ সদস্য এই ৭ জনকে দায়িত্ব দেয়া হয় তৃণমূল থেকে প্রার্থী বাছাই করে এক জনের নাম পাঠানোর। কিন্তু অধিকাংশ পৌরসভাতেই একক প্রার্থী মনোনীত করতে পারেননি দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

এ পরিস্থিতিতে তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকা থেকে বাছাই করে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বোর্ড প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে তাদের নামে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন। এছাড়া কোথাও কোথাও তৃণমূল থেকে একক নাম পাঠানো হলেও বোর্ড থেকে তিনি মনোনয়ন পাননি এমনও হয়েছে। কারণ দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজস্ব উদ্যোগে একাধিক জরিপ করিয়েছেন। সেই জরিপের সঙ্গে মিলিয়ে যাকে অধিক জনপ্রিয় মনে করা হয়েছে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মনোনয়ন প্রতিযোগিতায় হারার কারণে অনেক পৌরসভাতেই বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবার পৌরসভায় মেয়র পদের মনোয়ন প্রতিযোগিতায় প্রার্থী হতে চেয়েছেন অনেকেই। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করাটা একটা মর্যাদার বিষয় বলে তারা মনে করছেন। কিন্তু দলীয় প্রতীক না পাওয়ায় তাদের কারো কারো মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এই ক্ষোভের থেকেও কেউ কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন। এটা হলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও তারা মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। দলের গঠনতন্ত্রে এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই। তবে কেউ দাঁড়ালে তখন দেখা যাবে।

আওয়ামী লীগের বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এ রকম কোথাও কোথাও শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুবই কম। যদি কেউ দাঁড়িয়ে যায় তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দলের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, আমরা আশা করছি সবাই দলের সিদ্ধান্ত মেনে, দলের নেতা (শেখ হাসিনা) যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তার সঙ্গে কাজ করবেন। এ সিদ্ধান্ত যদি কেউ অমান্য করে তখন পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলের প্রার্থীর বিপরীতে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখা হবে। এরপর প্রয়োজনে বহিষ্কার করা হবে। সৌজন্যে- বাংলানিউজ।

ঢাকা জার্নাল, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.