জিএম কাদেরের বাসায় হামলা: মামলা নিতে গড়িমসি

রংপুরে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা নিতে কোতয়ালি থানার ওসি গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ আলী।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা রেকর্ডের আল্টিমেটাম দিয়ে আজ শনিবার তিনি জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানায় মামলা করার সময় জাতীয় পার্টি নেতা মিলন, মোকাম্মেল হোসেন চৌধুরীসহ অন্য নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরিফ আলী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দিতে গেলে ওসি আতাউর রহমান এক ঘণ্টারও বেশি সময় বসিয়ে রেখে টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে ওসি মামলা রেকর্ড করতে পারবেন না বলে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। তার অভিযোগ, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে যেভাবে পুলিশ সরকারের তাঁবেদারি করেছে, এখন ৫ আগস্টের পর আবারও একই কাজ করছে তারা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রংপুরে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে আরিফ জানান, এজন্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৭ দিন কারাগারে আটক থাকার পর ৫ আগস্ট তিনি মুক্তি পান। তা ছাড়া জাতীয় ছাত্র সমাজ রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারের যোদ্ধা ছিল।
ছাত্র সমাজের এই নেতা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের ঢাকা থেকে রংপুরে আসেন। সন্ধ্যায় তিনি নগরীর সেনপাড়ায় স্কাই ভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনিও (আরিফ) দলের চেয়ারম্যানের সফরসঙ্গী হিসেবে ওই বাসভবনে ছিলেন। রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা জিএম কাদেরের বাসভবনে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা জিএম কাদের যে কক্ষে ছিলেন, সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, জিএম কাদেরকে হত্যা করার উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় বাসভবনের সামনে থাকা মোটরসাইকেলে গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু থানার ওসি হামলার ঘটনায় মামলা না নিয়ে নানা টালবাহানা করেন। এত বড় ঘটনায় যদি মামলা নেওয়া না হয়, তাহলে আইনের শাসন থাকে কোথায়! তিনি ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন-এই সময়ের মধ্যে মামলা রেকর্ড করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে আবারও ওসির কাছে গেলে তিনি লিখিত অভিযোগটি গ্রহণ করে বলেন, আমরা বিষয়টি দেখবো। এ বিষয়ে রাত ১২টার দিকে ওসি আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগটি নিয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments