শেয়ারবাজারে কারসাজি: সাকিবকে দুদকে তলব
কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ২৫৬ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২৫ ও ২৬ নভেম্বর দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে তাঁদের বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেন, সাকিব আল হাসানকে ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় হাজির হতে বলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিবের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক একটি অনুসন্ধানও চলছে। ওই অনুসন্ধান–সংশ্লিষ্ট তথ্যও একই দিন গ্রহণ করা হবে।
সাকিব আল হাসানের সংশ্লিষ্টতা প্রসঙ্গে মামলার এজাহারে বলা হয়, প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্স ও সোনালী পেপারস লিমিটেড—এই তিন কোম্পানির কারসাজি করা শেয়ারে সাকিব বিনিয়োগ করে প্রতারণায় যোগ দেন। এর মাধ্যমে তিনি ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি 'রিয়েলাইজড ক্যাপিটাল গেইন' নামে অপরাধলব্ধ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
মামলায় সাকিব আল হাসান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন সমবায় অধিদপ্তরের সাবেক উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (হিরু) ও তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মো. বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি আবুল খায়ের সহযোগীদের সঙ্গে যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অধ্যাদেশ, ১৯৬৯-এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। বিও হিসাব ব্যবহার করে ফটকা ধাঁচের সিরিজ লেনদেন, প্রতারণামূলক অ্যাকটিভ ট্রেডিং, গ্যাম্বলিং স্পেকুলেশনসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে বাজার কারসাজি করে নির্দিষ্ট শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে এজাহারে বলা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, অস্বাভাবিক ক্যাপিটাল গেইনের নামে উত্তোলিত অপরাধলব্ধ অর্থ বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে উৎস গোপন করেন আবুল খায়ের। এ কাজে তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানও সহযোগিতা করেছেন। ক্যাপিটাল গেইন হিসেবে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকা স্থানান্তরের তথ্য মামলায় উঠে এসেছে। তদন্তে দেখা যায়, তাঁর নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৭ জুন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলাটি করা হয়।
Comments