রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে হাসলো পাকিস্তান, মুগ্ধ করলেন সালমান-রউফ
ব্যাট হাতে সালমান আলি আগার সেঞ্চুরি ও হুসাইন তালাতের হাফসেঞ্চুরির পর বোলিংয়ে মোমেন্টাম এনে দেন হারিস রউফ। পাকিস্তানের সহজ জয়–ই কল্পনায় ছিল স্ক্রিনের সামনে বুঁদ হয়ে থাকা দর্শকদের। তবে শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা তাতে চিড় ধরান। ম্যাচটি প্রায় কেড়ে নিতে বসেছিলেন তিনি। তবে ৪৯তম ওভারে নাসিম শাহ'র ফাঁদে পা দিয়ে লং অনে ক্যাচ আউট হাসারাঙ্গা, লঙ্কানরাও ম্যাচটি হেরেছে ৬ রানে।
রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে গতকাল (মঙ্গলবার) তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকরা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৯৯ রান তোলে। তাদের পক্ষে সালমান অপরাজিত ১০৫, তালাত ৬২ এবং মোহাম্মদ নওয়াজ ৩৬ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা নেন ৩ উইকেট।
৩০০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিল লঙ্কানরা। ১১.৩ ওভারেই তাদের উদ্বোধনী ৮৫ রান তুলে ফেলে। এরপরই পাকিস্তানকে মোমেন্টাম পাইয়ে দেন গতিতারকা হারিস রউফ। ওই ওভারেরই চতুর্থ ও পঞ্চম বলে তার শিকার ওপেনার কামিল মিশারা ও কুশল মেন্ডিস। মিশারা ৩৬ বলে ৩৮ রান করে শাহিন আফ্রিদির ক্যাচ এবং কুশল প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফেরেন। মাঝে এক ওভার বিরতির পর আবার ফিরেই রউফের তৃতীয় শিকার পাথুম নিশাঙ্কা। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়া এই ওপেনার ৩৯ বলে ২৯ রান করেন।
অল্প সময়ের মাঝেই তিন উইকেট হারানো সফরকারীদের সেই ধাক্কা সামলান সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা। তাদের জুটি স্থায়ী হয় ৫৭ রান পর্যন্ত। এবারও পাকিস্তান ব্রেকথ্রু পায় রউফের গতিতে। এবার অবশ্য কৃতিত্ব পাচ্ছেন বাবর আজমও। স্লিপে লাফিয়ে এক হাতে তার তালুবন্দী করা ক্যাচ নিয়ে বাহবাও কুড়িয়েছেন। সামারাবিক্রমনা ফিরলেন ৩৯ রান করে। আসালাঙ্কা ও জানিথ লিয়ানাগে নতুন জুটি গড়ার চেষ্টায় বেশিক্ষণ আগাতে পারেননি। লঙ্কান অধিনায়ক আসালাঙ্কা ৩২ এবং লিয়ানাগে থামেন ২৮ রানে। কামিন্দু মেন্ডিসের বিদায়ে ২১০ রানে লঙ্কানরা ৭ উইকেট হারায়।
শ্রীলঙ্কানরা অনেকটাই কী হতে চলেছে হয়তো টের পেয়ে যায়। তবে ক্রিজে তখনও স্বীকৃত ব্যাটার হাসারাঙ্গা ছিলেন। নিজের স্বভাবসুলভ চরিত্রের বাইরে গিয়ে শেষ পর্যন্ত টিকলে ফল পাল্টে দিতেও পারতেন সম্ভবত। দুষ্মন্ত চামিরার সঙ্গে ৩৭ এবং মহেশ থিকশানার সঙ্গে ৩২ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানের গ্যালারিতে প্রায় স্তব্ধতা নামাতে বসেছিলেন। কিন্তু ৪৯তম ওভারে নাসিমের একটি ফুল টস লং অনে খেলতে গিয়ে বাবরের হাতে ধরা। ৫২ বলে ৭ চারে ৫৯ রান করে ফিরলেন হাসারাঙ্গা। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২১ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে প্রথমবার আনা হয় হুসাইন তালাতকে। থিকশানা ১৪ রান তুলে প্রায় লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছিলেন, কিন্তু ৬ রানের সমীকরণ মেলানো হলো না।
থিকশানা ২১ রানে অপরাজিত থাকলেও ফেরেন হতাশা নিয়ে। লঙ্কানরা ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৯৩ রান তোলে। পাকিস্তানের পক্ষে হারিস রউফ একাই ৪ উইকেট শিকার করেছেন। নাসিম ও ফাহিম আশরাফ মিলে নেন ২টি করে উইকেট।
Comments