স্বপ্নের চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস বাস্তবে রূপান্তর প্রক্রিয়া শুরু
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে চাঁদপুরে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের পথে এক ধাপ এগোল চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ। মহাদেব গাছতলা মৌজায় ৩০.১২ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ বর্তমানে পুরোদমে চলছে। ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত যৌথ তদন্তের কাজও শেষ পর্যায়ে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, কাজের গতি বজায় থাকলে চলতি বছরের মধ্যেই ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভূমি অধিগ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বৃন্দের পরিদর্শন করতে দেখা যায়।
জানা যায়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, ১০টি আবাসিক ভবন, ১১টি অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় এবং প্রশিক্ষণ প্রদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয় ২০১৮ সালে। তবে অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ তলায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এই কলেজে ৩২৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। স্থায়ী ক্যাম্পাসের অভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের সংকটের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক ও হোস্টেল সংকট।
প্রকল্পের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য প্রস্তাবিত জমি নিয়ে কিছু জটিলতা ও বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, প্রস্তাবিত ৩০ একর জমির মধ্যে প্রায় ১৪ একরই জলাভূমি, যা বর্ষাকালে প্লাবিত থাকে। পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই জলাভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বালু ভরাট করতে হবে এবং নদী ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হবে, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এছাড়াও, ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়েও কিছু প্রশ্ন উঠেছিল, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশাবাদী যে সব জটিলতা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ ডা: হারুনুর রশিদ বলেন, মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে অচিরেই সকল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি চিকিৎসা ক্ষেত্রে চাঁদপুরবাসী পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজের সুযোগ সুবিধা পাবে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব একরামুল ছিদ্দিক বলেন, আমরা অধিগ্রহণকৃত ভূমি প্রত্যেকটি দাগ নম্বর ধরে ধরে বর্তমানে জমির শ্রেণী নির্ধারণ করছি। জমির শ্রেণি নির্ণয়ের মাধ্যমে অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ করার পর পরবর্তী ধাপে কাজ এগিয়ে নিতে আমরা সর্বক্ষণে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রশাসন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছেন। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে চাঁদপুর ও আশেপাশের জেলার মানুষের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
Comments