গাজায় ত্রাণ দিতে গিয়ে আটক দুই বোনের ভয়াবহ বর্ণনা

গাজা উপত্যকার অবরোধ ভাঙতে এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে গঠিত সবচেয়ে বড়ো নাগরিক নৌবহরের নাম গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। সম্প্রতি এ উদ্যোগ নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। প্রায় ৪০টিরও বেশি জাহাজে ৪৪ দেশের ৫শ' অংশগ্রহণকারী যোগ দেন। তাদের মধ্যে আছেন গ্রেটা থুনবার্গ, ম্যান্ডলা ম্যান্ডেলা (নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি), ইতালির সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন দেশের আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা। সেই নৌবহরে ছিলেন গায়িকা-অভিনেত্রী দুই বোনও।
এটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো নাগরিক-নেতৃত্বাধীন নৌবহর হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে দখলদার ইসরায়েল বলছে এটি প্ররোচনামূলক ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এ কারণ দেখিয়ে নৌবহর আটকে দেয় ইসরায়েল। আটক করা হয় অনেক জাহাজ। যেখানে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন দুই বোন হেলিজা হেলমি ও হাজওয়ানি হেলমি। সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে তারা জানালেন সেই অভিজ্ঞতার কথা।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন গায়িকা-অভিনেত্রী দুই বোন হেলিজা হেলমি ও হাজওয়ানি হেলমি। এ আলাপচারিতায় হাজওয়ানি হেলমি বলেন, 'মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের সাহায্য করা। আমাদের অবরোধ থামাতে হবে এবং ফিলিস্তিনিদের খাদ্য ও ত্রাণ পৌঁছে দিতে হবে।'
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক অবস্থার ঘটনা বর্ণনা করে হাজওয়ানি বলেন, 'আপনি কি কল্পনা করতে পারেন, আমরা শৌচাগারের পানি পান করেছি? অনেকে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেই অসুস্থদের দেখে ইসরায়েলিরা বলছিল, তারা মারা গেছে কি না! যদি না যায় তাহলে এটা তাদের সমস্যা না। ইসরায়েলিরা খুবই, খুবই নির্মম মানুষ।
আমি মনে করি, বিশ্বকে বলা উচিত ইসরায়েলিরা খুবই নির্মম।'
আটক থাকা অবস্থায় তিন দিন খাবার খাননি জানিয়ে হেলিজা হেলমি বলেন, 'আমি ১ অক্টোবর খেয়েছিলাম। তারপর আজ (৪ অক্টোবর) প্রথম খাবার খেলাম। তিন দিন কোনো খাবার খাইনি, শুধু শৌচাগারের পানি পান করেছি।'
শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন দুই বোন। জানান, তুর্কি জনগণের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ তারা দুই বোন। সেই সঙ্গে তারা খুবই আবেগাপ্লুত। সবার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদও জানিয়েছেন দুই বোন।
Comments