চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ৪০

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ফেসবুকে ছবি শেয়ার করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। ৩ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে হাজীগঞ্জের গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা বাজারে এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও রুমিন ফারহানাকে ব্যঙ্গ করে পোস্ট দেয়া একটি ছবি শেয়ার দেন জামায়াত নেতা। আর এই ছবি ফেসবুকে শেয়ার দেয়া কে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডা হতে বিএনপি ও জামাত সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ইউনিয়নের জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার একটি ব্যাঙ্গার্তক ছবি শেয়ার করেন। ওই পোস্টকে অবমাননাকর উল্লেখ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্ধ হন। পরে ইলিয়াস হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে পোস্টটি মুছে ফেলেন। এ বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার স্থানীয়ভাবে বৈঠকের কথা থাকলেও বৈঠকের আগেই উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা।
সংঘর্ষে বিএনপির অন্তত ২০ জন এবং জামায়াতের অন্তত ২০ জন আহত হন। গুরুতর আহত বিএনপির পাঁচজন নেতাকর্মীকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উপজেলা যুবদলের সদস্য নেছার আহমেদ চৌধুরী ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রয়েছেন। অপরদিকে জামায়াতের গুরুতর আহত ৮ জনকে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে পালিশারা বাজারের দোকানপাট কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত যুবদল নেতা নেছার আহমেদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমানের এই অবমাননাকর বিষয়টি আমরা কোনভাবে মেনে নিতে পারি না। আমরা ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু অতর্কিতভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে জামায়াত কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কুদ্দুস বলেন, আমাদের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। উপজেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী জামায়াতের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা দ্রুতই নেওয়া হবে।
অন্যদিকে ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আব্দুল মোতালেব বলেন, এটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছে। তবে বিএনপি কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি জয়নাল আবেদিন জানান, আমাদের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৮ জনের অবস্থা গুরুতর। তারা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে।
হাজীগঞ্জের উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আক্তার হোসেন দুলাল বলেন, ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে আজকের এই সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিউদ্দিন ফারুক জানান, জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে ৪/৫ জন আহত হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছেছে। তবে এখনো কোন আটক কিংবা লিখিত অভিযোগ নেই থানায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।
Comments