চাঁদপুরে লুটপাটের পর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হলো নাছিমার বাড়ীঘর

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মব সৃষ্টি করে লুটপাটের পর প্রকাশ্যেই আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হলো নাছিমা বেগমের (৪২) বাড়ীঘর। আইন অমান্যের এ ঘটনা দেখেও না দেখার ভান করে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে কেউই এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ।
১ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের উপাদিক গ্রামে একেবারে প্রকাশ্যেই এই লুটপাট ও বাড়ী জ্বালাতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে শাহনাজ বেগম নামে এক গৃহবধূর গায়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তবে ধারনা করা হয়, সুদের লেনদেনকে কেন্দ্র করে নাসিমা বেগম ও তার সহযোগীরা শাহনাজের(৩৬) ওপর এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। এরপর নাছিমা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলে তাকে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে প্রেরন করে পুলিশ। এরমধ্যে ঢাকায় ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার শাহনাজ মারা গেলে তার বাড়ীর লোকেরা দলবল নিয়ে আইন হাতে তুলে নিয়ে প্রকাশ্যেই নাছিমার বাড়ীতে লুটপাট শেষে তার ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
মৃত শাহনাজ বেগম লাকির স্বামী ক্ষুদ্ধ আমিনুল খান বলেন, নাছিমা বেগম হচ্ছে একজন সুদ ব্যবসায়ী। গত কয়েক মাস ধরেই সুদের টাকা পরিশোধ ও স্ট্যাম্প দেয়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে তার সাথে আমাদের বিরোধ চলছিলো। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে ইতিপূর্বেও আমার স্ত্রীকে কয়েক দফা মেরেছিলো। সবশেষ গত শুক্রবার রাতে আমার স্ত্রীকে পিছন দিক থেকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুণ ধরিয়ে দেয়। ঐ ঘটনায় নাছিমা বেগমসহ আরো কয়েকজন লোক জড়িত থাকার খবর রয়েছে। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, নাছিমা বেগম বর্তমানে কারাগারে রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে তথ্য যাচাই বাছাইও করছে পুলিশ। কিন্তু এরমধ্যে মব সৃষ্টি করে লুটপাট শেষে তার বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়ার যে ঘটনা ঘটানো হলো তা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ কাজ। এটা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।
এদিকে নাছিমা বেগমের স্বামী হাফিজ মিয়াসহ তাদের স্বজনরা ভয়ে আতঙ্কে পলাতক থাকায় তাৎক্ষনিক তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, থানাতে মামলার পর নাছিমা বেগমকে গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
Comments