১১ কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য বিলীনের পথে গ্রামীণফোন-বাংলালিংক

১১ কোটির বেশি মোবাইল গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের কাগুজে বা হার্ডকপি ধ্বংস করতে চায় বাংলালিংক ও গ্রামীণফোন। অপারেটর দুইটি জানিয়েছে, এসব গ্রাহকের তথ্য এরমধ্যেই ডিজিটালি সংরক্ষণ করা হয়েছে। তাই কাগুজে কপি সংরক্ষণে বাড়তি ব্যয় এবং নিরাপত্তার ঝুঁকি নিতে চায় না তারা। এই কারণে তারা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করেছে, যদিও নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইল অপারেটররা কাগজের ফরমে গ্রাহকের নাম, জন্ম তারিখ, এনআইডি নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করত। তবে ২০১৮ সালের আগস্টে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নির্দেশ দেয় যে এসব তথ্য ইলেকট্রনিক ফরম্যাটে সংরক্ষণ করতে হবে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের পর মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকের তথ্যের কাগুজে কপি সংরক্ষণের প্রয়োজন দেখছে না।
সম্প্রতি বিটিআরসির কাছে সংরক্ষিত ১১ কোটি ৯০ হাজার গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের হার্ডকপি ধ্বংসের অনুমতি চেয়েছে বাংলালিংক ও গ্রামীণফোন। বাংলালিংক জানিয়েছে, ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের কাছে ৭ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ১৬৪ জন গ্রাহকের হার্ডকপি রয়েছে। এর মধ্যে ২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৬২টি হার্ডকপি ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেছেন, এ সংক্রান্ত প্রায় এক লাখ বাক্স একটি গুদামে সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। তবে যেহেতু এসব তথ্যের সফট কপি রয়েছে, তাই কাগুজে কপির আর কোনো প্রয়োজন নেই।
গ্রামীণফোন জানিয়েছে, তাদের কাছে বর্তমানে মোট ২১ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার হার্ডকপি রয়েছে। এর মধ্যে ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত আছে ৮ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার কপি। প্রতিষ্ঠানটির হেড অব রেগুলেটরি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স ইমতিয়াজ শফিক বলেন, এসব কাগজপত্র সংরক্ষণে অর্ধেক ফুটবল মাঠের সমান জায়গা ব্যয় হচ্ছে। যেহেতু সব তথ্যের স্ক্যান কপি সংরক্ষিত আছে, তাই কাগজগুলো রিসাইক্লিং করা সম্ভব।
তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ফাইলগুলো পুনঃনিরীক্ষণের পক্ষে বিটিআরসি। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে চারটি মোবাইল অপারেটর মোট ১৮ কোটি ৮৮ লাখ গ্রাহককে ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে।
Comments