হংকংয়ে সুপার টাইফুন আঘাত হানার আগেই অচলাবস্থা

হংকংয়ে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফুন 'রাগাসার' আঘাত হানার আগেই দেশটিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের নিরাপদে থাকার জন্য বাড়িতে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। বহু যাত্রীবাহী বিমান বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ সুপারমার্কেটে ভিড় করেছে এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ করছে। শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির জানালা টেপ দিয়ে আটকানো হয়েছে, যাতে ভাঙা কাচের ঝুঁকি কমানো যায়।
হংকং অবজারভেটরি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফুন 'রাগাসারের' বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার বা ১৩৭ মাইল। এর ফলে দেশটির গুয়াংডং উপকূলের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে। টাইফুনটি মূল ভূখণ্ড চীন, হংকং ও তাইওয়ানের ওপর প্রভাব ফেলবে এবং বুধবার পর্যন্ত গুয়াংডং উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
চীনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক সিসিটিভি জানিয়েছে, গুয়াংডংয়ে ইতিমধ্যে ৭ লাখ ৭০ হাজার সাধারণ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। দেশটির মোট দেড় মিলিয়নের বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে।
এদিকে হংকং সুপার টাইফুন 'রাগাসারের' কারণে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে। শহরের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পরিবহন পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৭০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পার্শ্ববর্তী ম্যাকাও ও তাইওয়ান।
অবজারভেটরি আরও জানিয়েছে, বুধবার দেশটির উপকূলীয় ও উচ্চ ভূমিতে ঘূর্ণিঝড়-শক্তির বাতাস বয়ে যেতে পারে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে। হংকংয়ের উপকূলীয় অঞ্চলে পানির স্তর দুই মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কিছু এলাকায় সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ মিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিচু এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি শক্তিশালী করতে বালির বস্তা বিতরণ করেছে। বাসিন্দারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ করছে।
ইতিমধ্যে টাইফুন 'রাগাসারের' বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার বা ১৬২ মাইল ছাড়িয়েছে। যা এটিকে ২০২৫ সালের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্যাটাগরি ৫ টাইফুন হিসেবে পরিচিত করেছে।
এরইমধ্যে চীনের দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশগুলোতে ভারী বৃষ্টি এবং ঝড়ো ঢেউয়ের কারণে স্কুল, কাজ এবং পরিবহন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। গুয়াংডংয়ের উপকূলীয় এলাকায় সাত মিটার বা ২১ ফুট পর্যন্ত উঁচু ঢেউয়ের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। শেনজেন শহরে ৮০০টির বেশি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম জুয়ার কেন্দ্র ম্যাকাওর ক্যাসিনোও ঝুঁকির কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলে প্রায় ৬০ সেমি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
Comments