সাবেক ছাত্রদল নেতা ও স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের ৬৫ নম্বর সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: হাবিবুর রহমান এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয় সূর্যমনি গ্রামের এলাকাবাসী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর। বিষয়টি আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে নিশ্চিত করেছেন মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনসুর হেলাল।
লিখিত অভিযোগ পত্র এবং তথ্য প্রমাণের ভিক্তিতে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান মঠবাড়িয়া পৌর ছাত্রদের সাবেক সভাপতি থাকার সুবাদে বর্তমানে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান করান না। বিদ্যালয়ে মাঝে মধ্যে আসলেও সকাল ১১ টা থেকে বেলা ১২ টার মধ্যে চলে যান। পাঠদান করানোর সময় শিক্ষার্থীদের মারধর করেন।
এছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় ডেপুটেশনে ঢাকার মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে অবস্থান করেও তিনি বিদ্যালয়ে কার্যবিবরণী ও শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। যার চিঠির স্মারক নম্বর- উশিঅ/মঠ/পিরোজ/২৩৭ এবং তারিখ (২৫ মে) ২০২৫, সহ এমন ৪টি তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অন্য একটি পত্র, যার স্মারক নম্বর- উশিঅ/মঠ/পিরোজ/২৫০। এতে দেখা যায়, বিদ্যালয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রনয়ণ এবং বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০২৩ বিষয়ক দিনব্যাপী মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে ওই শিক্ষক হাবিবুর রহমানের নাম না থাকা স্বত্বেও প্রভাব খাটিয়ে তিনি এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
এ বিষয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতা ও সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: হাবিবুর রহমান জানান, আমার চাকরিরত অবস্থায় এরকম কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত হয় নাই। কে বা কাহারা এরকম অভিযোগ করেছে তারাই বলতে পারবে, কি জন্য এ অভিযোগ করেছে। যদি কোনো আওয়ামী লীগের লোক থাকে সে তো ৫ তারিখের পরেই এ কথা বলবে। প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় আমাকে ডেপুটেশন দেয়া হয়েছে। হাজিরা খাতায় তো স্বাক্ষর হওয়ার কথা না, তারপরও কি হয়েছে সেটা বলতে পারবো না। আমি ডেপুটেশন ছাড়া কোথাও যাইনি। কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষরটি হয়তো মিস্টেক হয়েছে। আমাকে যেকয়টি ডেপুটেশন দেয়া হয়েছিল, সে কয়টিতে আমার যানা মতে স্বাক্ষর দেয়া নেই, তারপরও খাতায় দেখতে হবে স্বাক্ষর দেয়া আছে কি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্কুল শিক্ষক জানান, হাবিবুর রহমান সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বিদ্যালয় থেকে চলে যায় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করে। তিনি প্রতিদিন স্কুল চলাকালীন সময়ে অফিসে ঘোরাঘুরি করে ও সাধারণ শিক্ষকদের কাজের দালালি করে অর্থ উপার্জন করে।
সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার ডলি বলেন, তারা অন্য স্কুলে ছিল, আমার স্কুলে যোগদান করছে ২০১৯ সালে তখন আমি ছিলাম না। ১৯ সালের ডিসেম্বরে আমি যোগদান করেছি। দেশের যে সময় যে প্রেক্ষাপট আসে সেই অনুপাতে সবাই কাজ করে, বলার তেমন কিছু নাই। বিষয়টি আমি আগের শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করেছিলাম। এখানে আমরা কিছু হেডমাস্টাররা বাকরুদ্ধ থাকি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের রোষানলে থাকা লাগে। কোনো ভালো কাজ করতে গেলে আমরা তাদের রোষানলে পরে যাই। এসব বিষয়ে তাকে অনেকবার বলা হয়েছে। এটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে হয়তো শুরাহা হবে।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনসুর হেলাল বলেন, এসব বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments