আইয়ুব বাচ্চুর স্মৃতি সংরক্ষণে জাদুঘর নির্মাণের দাবি

আইয়ুব বাচ্চুর স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে একটি জাদুঘর নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন প্রয়াত ব্যান্ডশিল্পীর স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার চন্দনা। শনিবার (১৬ আগস্ট) আইয়ুব বাচ্চুর ৬৩তমবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় 'আইয়ুব বাচ্চু: সেলিব্রেটিং লাইফ, লিগ্যাসি অ্যান্ড চলো বদলে যাই' শীর্ষক অনুষ্ঠান।
সেখানে ফাউন্ডেশনের সভাপতি চন্দনা বলেন, 'আইয়ুব বাচ্চুর স্বপ্নের জায়গা এবি ফাউন্ডেশন সম্প্রতি নিবন্ধন পেয়েছে। বাচ্চুর জন্মদিন ঘিরে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করছি। বাচ্চুর গিটারগুলো ঘরে মোছামুছি করা তো আমার কাজ না। বাচ্চু বেশ কিছু গান করে গেছেন, যা প্রকাশ পায়নি। সেই গানগুলো সামনে আনার কাজ আমরা শুরু করেছি। তবে আমি একটা মিউজিয়ামের দাবি জানাব।'
তিনি বলেন, 'বাচ্চু তো বিশাল একটা ইন্সটিটিউটের মত। তার গিটার, সে অনেক খরচ করে অনেক বাদ্যযন্ত্র কিনেছে, সেগুলো আমরা কাজে লাগাতে চাই। পরবর্তী প্রজন্ম যেন বাচ্চুকে স্মরণ রাখতে পারে সেজন্য কাজ করতে চাই।'
তিনি আরও বলেন, 'বাচ্চু তার সন্তানদের বলে গেছে, "তোমরা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে এসো না। আমি যে লড়াই করে গিয়েছি, তোমরা সেটা পারবা না।" আমিও মিউজিকের লোক না, তাই এবি ফাউন্ডেশনের মাসুদ, শামীম, এদেরকে নিয়ে পথচলা শুরু করেছি। সামনে বেশ কিছু পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।'
আইয়ুব বাচ্চু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নকীব খান, হামিন আহমেদ, ফোয়াদ নাসের বাবু, লাবু রহমান, শহীদ মাহমুদ জঙ্গি, ওয়ারফেজ ব্যান্ডের শেখ মনিরুল আলম টিপু, অবসকিওর ব্যান্ডের সাইদ হাসান টিপু, রফিকুল আলম, পিলু খান,আসিফ ইকবাল ও লতিফুল ইসলাম শিবলী উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন এলআরবি ব্যান্ডের সদস্যরাও।
পার্থ বড়ুয়ার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠান শুরু হয় আইয়ুব বাচ্চুর ওপর বানানো প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে।
এরপর একে একে সবাই আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে স্মৃতিকথা ও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) সভাপতি ও মাইলস ব্যান্ডের হামিন আহমেদ বলেন, 'বাচ্চুর এ অনুষ্ঠানে একটা কথাই বলতে চাই, শিল্পীরা বেঁচে থাকবেন তার গান দিয়ে, তার কর্ম দিয়ে। ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে মিউজিক বাঁচিয়ে রাখতে বাচ্চুকে নিয়ে আর্কাইভের পাশাপাশি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটা জাদুঘর তৈরি করার দাবি তুলতে চাই।
সরকার যদি মিউজিকের আলাদা মিউজিয়াম তৈরি করে দিত, তাহলে বাংলাদেশে যত জ্ঞানী গানের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার আছেন, তাদের একটা আর্কাইভ তৈরি হত। আমাদের এটা থাকা উচিত।'
নকীব খান বলেন, 'বাচ্চুর গিটার বাজানো ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সাধনা বাচ্চুকে এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন সংগীতশিল্পীর মিউজিক শুনত, সে ফলো করত কীভাবে সেটা করা যায়, সেটা চেষ্টা করত। কোন গানে কোন ধরনের সুর ভালো মানাবে, সে গবেষণা করত বাচ্চু। বাচ্চু আমাদের সঙ্গে এখনো আছেন, থাকবেন।'
ফোয়াদ নাসের বলেন, 'বাচ্চু খুব সহজেই অভিমান করত, আবার সহজেই সেই অভিমান জল হয়ে যেত। আমাদের ঐতিহ্যবাহী যেসব গান আছে, সিনেমার গান আছে, সেগুলোতে বাচ্চুকে আরও অনেক বেশি যুক্ত করা যেত। বাচ্চু সেগুলো বেশ ভালো করত। আমরা তাকে হারিয়ে তার সেই প্রতিভাগুলো হারিয়ে ফেলেছি।'
পরে কেক কেটে এবং বাচ্চুর জনপ্রিয় কিছু গান গেয়ে শোনানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।
Comments