উত্তরায় সিনেমা–নাটকের শুটিং বন্ধে চিঠি, শিল্পীদের ক্ষোভ

ঢাকার উত্তরা সেক্টর-৪-এ অবস্থিত শুটিং হাউসগুলোতে সিনেমা–নাটকের শুটিং বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় কল্যাণ সমিতি। ২০ জুলাই সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠিতে হাউস মালিকদের বলা হয়েছে, শুটিংয়ের কারণে রাস্তায় ভিড়, যান চলাচলে বিঘ্ন এবং বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় সমস্যা হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম নীতিমালার পরিপন্থী এবং পরিবেশ ও সুনাম রক্ষায় হাউস মালিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করা হয়।
উত্তরা সেক্টর-৪–এ তিনটি প্রধান শুটিং হাউস রয়েছে: লাবণী-৪, লাবণী-৫, আপনঘর-২। এই হাউসগুলোর একটি, লাবণী-৪-এর মালিক আসলাম হোসাইন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, '২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছি, কেউ কখনো অভিযোগ করেনি। এখন হঠাৎ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ডিরেক্টর গিল্ডকে জানিয়েছি। আশা করি পাশে পাব।'
অভিনেতা ও ডিরেক্টর গিল্ড সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, 'একটা ধারাবাহিক নাটকের অনেক কন্টিনিউটি থাকে। হঠাৎ করেই বন্ধ বলা যায় না। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি, আজই চিঠি পাঠাব।'
নির্মাতা মাহমুদ দিদার বলেন, 'উত্তরায় অনেক বছর ধরে শুটিং হয়। এখন বলা হচ্ছে বন্ধ করতে। মনে হচ্ছে শুটিং কালচারই উঠে যাবে।' নির্মাতা তপু খান বলেন, 'শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশে বাধা এই সিদ্ধান্ত। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হোক।'
অভিনেতা ও অভিনয়শিল্পী সংঘ সাবেক সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান বলেন, 'অফিস, স্কুল, ব্যবসা সব হয় আবাসিকে। শুধু শুটিং নিয়ে সমস্যা? আগেও সমাধান হয়েছে। এবারও তা-ই হবে আশা করি।'
কল্যাণ সমিতি বলছে, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম (যেমন শুটিং) নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদনসাপেক্ষ এবং স্থানীয়দের সম্মতি ছাড়া অনুমোদন অগ্রহণযোগ্য। তবে নাট্যজগতের অনেকে বলছেন, বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে নিয়মনীতি ঠিক করে শুটিংয়ের সময় ও পদ্ধতি নির্ধারণ করা যেতে পারে, কিন্তু সরাসরি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবতাবিরোধী।
ডিরেক্টর গিল্ড জানিয়েছে, তারা শুটিং হাউস মালিকদের পাশে থাকবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান খুঁজবে। ইতিমধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ চিঠি প্রস্তুত করা হয়েছে।
Comments