চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অভিযানে ৬ মাসে ১৯ কোটি টাকার ভারতীয় মাদক ও পণ্য জব্দ

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের গত ৬ মাসে বিভিন্ন চোরাচালান বিরোধী অভিযানে ১৯ কোটি ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৩০৭ টাকার ভারতীয় মাদক ও পণ্য জব্দ করেছে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক ও উপ-অধিনায়ক মেজর মাসুদ হায়দার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারী হতে ২০ জুলাই পর্যন্ত সর্বমোট ২ হাজার ৪৭৮ বোতল মদ, ৩ হাজার ৭৬৪ বোতল ফেন্সিডিল, ১৩৭ দশমিক ৪ কেজি গাঁজা, ১১৬ টি ইয়াবা, ১ কেজি কোকেন, ১ দশমিক ৮৫৫৫ কেজি হেরোইন, ১৮ হাজার ৭৮৩ টি ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, ৮৭৮ টি ভায়াগ্রা, ২৭৯ টি বিভিন্ন প্রকার নেশাজাতীয় ইনজেকশন, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কসমেটিকস, পোশাক আইটেম, পেঁয়াজের বীজ, পাটের বীজ, কীটনাশক এবং আরও বিভিন্ন প্রকারের ভারতীয় মালামাল উদ্ধার করা হয়। যার সর্বমোট তালিকা মূল্য ৩ কোটি ৯৩ লাখ ২২ হাজার ৯৯৪ টাকা।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারী ২ কেজি ৯০০ গ্রাম, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২ হাজার ৩৩৪ দশমিক ৫৫ গ্রাম, ৪ মার্চ ২ হাজার ৪১৭.১৯ গ্রাম, ২৭ মার্চ ৩ হাজার ৬ দশমিক ৯৫ গ্রাম, ১৪ মে ৭০৫ দশমিক ৫ গ্রামসহ সর্বমোট ১১ কেজি ৩৬৩.৭৪ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। যার তালিকা মূল্য ১২ কোটি ৯৫ হাজার ৫৩ হাজার ৯২৬ টাকা।
২০২৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ১৪ কেজি ৯৮৩ গ্রাম, ১৮ এপ্রিল ১২ কেজি ১৫০ গ্রাম, ৯ জুলাই ৯ কেজি সর্বমোট ৩৬ কেজি ১৩৩ গ্রাম রূপো উদ্ধার করা হয়। যার তালিকা মূল্য ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৩৮৭ টাকা।
ওই সময়ের মধ্যে যৌথ টাস্ক ফোর্সের অধীনে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৬ টি টাস্ক ফোর্স অভিযানে অবৈধ কারেন্ট জাল, চায়না দোয়ারী জাল, ভারতীয় পেঁয়াজের বীজ, অবৈধ করাতকল থেকে বিপুল পরিমাণ কাঠ ও সরঞ্জামাদিসহ সর্বমোট ১ কোটি ৪১ লাখ ৩৬ হাজার টাকার মালামাল জব্দ করা হয়।
অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার সময় ৪ জন এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ১০ জন ধুর এবং ১ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়। এ সময়ে ১টি ওয়ান সুটার গান এবং ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
চলতি বছরের ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকাসমূহে গরু চোরাচালান রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। সীমান্ত দিয়ে কোনো গরু চোরাচালানের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও ঈদের পর পশু কোরবানীর চামড়া পাচার রোধে বিজিবি টহল দলগুলোর তৎপরতা ও নজরদারী ছিল অত্যন্ত কঠোর ও সজাগ। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদুল আযহার পর চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোনো চামড়া পাচারের ঘটনা ঘটেনি।
২০২৫ সালের ২৫ মে ১৯ জন, ২৭ মে ৩০ জন, ২০ জুন ১২ জন এবং ১৪ জুন ৬ জন অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী সর্বমোট ৬৭ জন বাংলাদেশী নাগরিককে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হয়। তবে বিজিবির সজাগ টহল তৎপরতায় পুশ-ইনকৃত ব্যক্তিরা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারেনি। তারা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকেই বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক হন। পরবর্তীতে আটককৃত ৬৭ জন বাংলাদেশী নাগরিককে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা ৬ ব্যাটালিয়নের পরিচালক ও অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি সকল ধরনের চোরাচালান প্রতিরোধ এবং মানব পাচার বন্ধে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
Comments