ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যক্ষ অপসারণ ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবারও উভয় পক্ষ তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যায়।
জানা গেছে, গত সোমবার কলেজে জলাবদ্ধতা নিরসন, জুলাই আন্দোলনে হামলাকারীদের বিচারসহ নয় দফা দাবি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ ও শিক্ষক পরিষদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। আলোচনায় কোনো সমাধান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা একদফা দাবি হিসেবে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি তুলে ধরে এবং তাকে প্রায় ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে প্রশাসনের নিরাপত্তায় রাত ১১টার পর অধ্যক্ষকে কলেজ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এই ঘটনার রেশ ধরে বুধবার ও বৃহস্পতিবার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পৃথক কর্মসূচি পালন করে। বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের কর্মসূচিতে বিসিএস শিক্ষা সমিতি ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকরা একাত্মতা প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে শিক্ষকরা দোষীদের শাস্তির দাবি করেন।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবারও বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে, গত এক বছরে নয় দফা দাবি নিয়ে একাধিকবার অধ্যক্ষের কাছে গেলেও তিনি শুধু সময়ক্ষেপণ করেছেন। তারা বলেন, অধ্যক্ষ নিজেই ব্যর্থতা স্বীকার করে গত সোমবার কলেজে না আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অথচ পরে আবার ফিরে এসেছেন। এ অবস্থায় তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেয়।
শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক গাজী মুহাম্মদ গোলাম সোহরাব হাসান বলেন, "সমস্যাগুলোর সমাধানে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। কিন্তু দাবির ইস্যু সামনে এনে অধ্যক্ষকে মসজিদে অবরুদ্ধ করা চরম ধৃষ্টতা। এসব ঘটনার পেছনে সুবিধাবাদী একটি মহল রয়েছে যারা কলেজকে অস্থিতিশীল করতে চায়।"
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবুল বাশার ভুঁইয়া বলেন, "শিক্ষার্থীদের যে দাবিগুলো রয়েছে, তা নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে মাস্টার প্ল্যান জমা দেওয়া হয়েছে। এরপর একাধিকবার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে অর্থ বরাদ্দের জন্য। আমাদের সাধ্যের মধ্যে যা সম্ভব, তা আমরা ইতিমধ্যে শুরু করেছি। তারপরও কেউ যদি অযৌক্তিক দাবি নিয়ে একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে আন্দোলন করে, তাহলে তা দুঃখজনক।"
Comments