চাঁদপুরে হত্যার চিরকুট নিয়ে মসজিদে ঢুকে খতিবকে কুপিয়ে জখম

চাঁদপুরে হত্যার চিরকুট নিয়ে জুম্মার খুতবা নিয়ে মসজিদের খতিব, আলেমে দ্বীন আ ন ম নুরুর রহমান মাদানীকে (৬০) চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে এক মুসল্লি। ১১ জুলাই শুক্রবার চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি মসজিদে জুমার নামাজ শেষে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারী মুসল্লি বিল্লালকে (৫০) মুসল্লীরা গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
আহত খতিব নুরুর রহমান মাদানী চাঁদপুর ২৫০ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মাদানী মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মোবাল্লেগ এবং বর্তমানে চাঁদপুরের একেক মসজিদে জুমার নামাজের সময় খতিবের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ গুনরাজদী এলাকায়। অপর দিকে হামলাকারী বিল্লাল চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন মনোহরখাদি গ্রামের মৃত আইয়ুব আলির ছেলে। বর্তমানে সে শহরের বকুলতলা রেলওয়ে এলাকায় চায়ের দোকানদারি করছিলো।
ঘটনার বিবরণে মুসল্লিরা জানায়, জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ করেই বিল্লাল নামে এক মুসল্লি মসজিদের খতিব আ, ন, ম নুরুর রহমান মাদানীকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। ইমাম সাহেবের ডাক চিৎকারে অপর মুসল্লিরা ছুটে এসে তাৎক্ষণিক ইমাম সাহেবকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এ সময়ে হামলাকারী বিল্লালকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে মসজিদের বারান্দায় আটকে রাখে। খবর পেয়ে শত শত মুসল্লী এসে মসজিদ ঘেরাও করে রাখে। হামলাকারী কে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায়। খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের এসআই নাজমুল সঙ্গীও ফোর্স নিয়ে উত্তেজিত মুসল্লিদের হাত থেকে হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এসময় হামলাকারী বিল্লাল উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, 'ইমাম সাহেব আমার নবীজিকে অবহেলা করে কথা বলেছেন। এর জন্য তার উপর হামলা করেছি।
বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা জানান, হামলাকারী বিল্লাল হোসেন কিছুদিন আগে খতিবের একটি খুতবায় নবী করীম (সা.) কে "ইসলামের বার্তাবাহক" বলার বিষয়টিকে অপমান হিসেবে ধরে নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন। হামলার সময় চাপাতির সঙ্গে নিয়ে শহরের প্রফেসর পাড়া মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার জন্য পূর্ব থেকে পরিকল্পনা নিয়ে এই মসজিদে অবস্থান করেন। তার কাছে একটি নোটও ছিল, যাতে লেখা ছিল, আমার নবীজিকে অপমান করার কারণে তাকে হত্যা করা হলো।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বাহার মিয়া বলেন, আসামিকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে নিষিদ্ধ কোনো সংগঠনের সদস্য বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
Comments