এনবিআর সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে হাতছাড়া হতে পারে রপ্তানি বাজার

বাজেটের মাস জুনে শুরু হয়ে এখনও চলছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) অচলাবস্থা। গতকাল শনিবার এনবিআরসহ দেশের সব শুল্ক-কর কার্যালয়ে দিনভর 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচি পালন করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন শুল্ক-কর কার্যালয় থেকে মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচিও পালিত হয়। আজ রোববারও চলবে 'শাটডাউন' ও 'মার্চ টু এনবিআর' কর্মসূচি।
এই আন্দোলনের ফলে চট্টগ্রাম বন্দর,বেনাপোল বন্দর,ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে কাজ হচ্ছে না। এতে এসব জায়গায় শুল্ক-কর আদায় কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের ব্যবসা –বানিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ নেতারা বলছেন, তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী, তবে তার আগে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তাদের অভিযোগ বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতের এ সংস্কারে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপেক্ষা করছেন,আন্দোলনকারীদের দমন–নিপীড়ন করছেন।
এমন এক পরিস্থিতিতে বানিজ্য সংগঠনের নেতারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা সতর্ক করেছেন,চলমান সংকট দ্রুত সমাধান না হলে প্রতিদিন প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে,পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ চলমান সংকট নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেছেন,"বর্তমান অচলাবস্থা থেকে যে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে,সরকার তা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে।"
আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে সরকারের বৈঠক হতে পারে মঙ্গলবার। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বসবেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতাদের সাথে। কিন্তু এর মধ্যে যে ক্ষতি হয়েছে তা বহন করতে হবে বহুদিন।
গত মে মাসে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর শর্ত পূরণ করতে জাতীয় রাজস্ব বিভাগ (এনবিআর) বিলুপ্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। বাজেট সহায়তার ছয় হাজার কোটি টাকা ঋণ নিশ্চিত করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এনবিআর এখন রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং আদায়—দুটি কাজ করে থাকে। নতুন অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন একটি বিভাগ করবে এবং আদায় করবে আরেক বিভাগ। রাজস্ব খাতে হয়রানি কমাতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা রাজস্বনীতি ও আদায় কার্যক্রম—দুটি আলাদা করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এরপর থেকে প্রতিবাদ করে আসছেন এনবিআরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তারা আশংকা করছেন, এর মাধ্যমে পুরো রাজস্ব ব্যবস্থায় নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা হবে। একটি পেশাদার সংস্থা হিসেবে স্বাভাবিক প্রত্যাশা এই যে, রাজস্ব খাতের নেতৃত্ব আসবে রাজস্ব খাত থেকে। রাজস্ব খাতের অভিজ্ঞ লোকেরাই এ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে পারেন। শুল্ক-কর নীতি প্রণয়ন ও আদায় অন্য লোকেরা করলে তা বাস্তবসম্মত না–ও হতে পারে। অতীতে এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসেবে সংস্থাটির সদস্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হতো। ক্ষেত্রবিশেষে সরকার উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে পারবে। কিন্তু অনেকদিন ধরেই এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন প্রশাসন ক্যাডারের সচিবরা। শীর্ষ কর্মকর্তা বাইরে থেকে আসায় এনবিআর তার সক্ষমতা দেখাতে পারেনি এবং একটি সুস্থ কর সংস্কৃতিও গড়ে উঠেনি।
নতুন অধ্যাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কর ও শুল্ক ক্যাডার থেকে যে ১৬ জন্য কর্মকর্তা এনবিআরের সদস্য ছিলেন,তাদের অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এনবিআরে সচিব পদমর্যাদার যেসব পদ ছিল, সেগুলোর ভবিষ্যৎ কী তা নিয়েও সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হচ্ছে না। এনবিআর কর্মকর্তাদের শঙ্কা,তাদের পদোন্নতির সুযোগ কমে যাবে। এনবিআরের বিলুপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা মনে করেন,এই সংস্কারের ফলে রাজস্ব খাতে প্রশাসন ক্যাডারের আধিপত্য বাড়বে,সীমিত হতে পারে শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের সুযোগ–সুবিধা ।
একযোগে এনবিআরের এই শাটডাউন ভয়ংকর বিপদ ডেকে এনেছে ব্যবসা বানিজ্যের জগতে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি ছাড়া কাস্টমস সেবা বন্ধ থাকার নজির কোথাও নেই। এতে রপ্তানি বিলম্বিত হচ্ছে যার ফলে কিছু বিদেশি বায়ার এয়ার শিপমেন্ট বা রপ্তানি আদেশ বাতিলেরও হুমকি দিচ্ছেন। অন্যদিকে পোর্ট ডেমারেজ নির্ধারিত রেটের চারগুণ বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
সরকার যত দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে ততই মঙ্গল। কারণ এই অচলাবস্থার কারণে সময়মতো পণ্য রপ্তানি করা না গেলে বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করতে পারে এবং ভবিষ্যতে নতুন অর্ডার দিতেও অনাগ্রহী হয়ে উঠবে। মনে রাখা দরকার, আন্তর্জাতিক বাজার কখনো বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করবে না, এসব ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে যেতে পারে – যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বয়ে আনবে অপূরনীয় ক্ষতি।
র আগে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তাদের অভিযোগ বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব খাতের এ সংস্কারে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপেক্ষা করছেন,আন্দোলনকারীদের দমন–নিপীড়ন করছেন।
এমন এক পরিস্থিতিতে বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা সতর্ক করেছেন,চলমান সংকট দ্রুত সমাধান না হলে প্রতিদিন প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে,পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ চলমান সংকট নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেছেন,"বর্তমান অচলাবস্থা থেকে যে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে,সরকার তা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে।"
আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে সরকারের বৈঠক হতে পারে মঙ্গলবার। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বসবেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতাদের সাথে। কিন্তু এর মধ্যে যে ক্ষতি হয়েছে তা বহন করতে হবে বহুদিন।
গত মে মাসে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর শর্ত পূরণ করতে জাতীয় রাজস্ব বিভাগ (এনবিআর) বিলুপ্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। বাজেট সহায়তার ছয় হাজার কোটি টাকা ঋণ নিশ্চিত করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এনবিআর এখন রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং আদায়—দুটি কাজ করে থাকে। নতুন অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন একটি বিভাগ করবে এবং আদায় করবে আরেক বিভাগ। রাজস্ব খাতে হয়রানি কমাতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা রাজস্বনীতি ও আদায় কার্যক্রম—দুটি আলাদা করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এরপর থেকে প্রতিবাদ করে আসছেন এনবিআরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তারা আশঙ্কা করছেন, এর মাধ্যমে পুরো রাজস্ব ব্যবস্থায় নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা হবে। একটি পেশাদার সংস্থা হিসেবে স্বাভাবিক প্রত্যাশা এই যে, রাজস্ব খাতের নেতৃত্ব আসবে রাজস্ব খাত থেকে। রাজস্ব খাতের অভিজ্ঞ লোকেরাই এ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে পারেন। শুল্ক-কর নীতি প্রণয়ন ও আদায় অন্য লোকেরা করলে তা বাস্তবসম্মত না–ও হতে পারে। অতীতে এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসেবে সংস্থাটির সদস্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হতো। ক্ষেত্রবিশেষে সরকার উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে পারবে। কিন্তু অনেকদিন ধরেই এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন প্রশাসন ক্যাডারের সচিবরা। শীর্ষ কর্মকর্তা বাইরে থেকে আসায় এনবিআর তার সক্ষমতা দেখাতে পারেনি এবং একটি সুস্থ কর সংস্কৃতিও গড়ে উঠেনি।
নতুন অধ্যাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কর ও শুল্ক ক্যাডার থেকে যে ১৬ জন্য কর্মকর্তা এনবিআরের সদস্য ছিলেন,তাদের অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এনবিআরে সচিব পদমর্যাদার যে-সব পদ ছিল, সেগুলোর ভবিষ্যৎ কী তা নিয়েও সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হচ্ছে না। এনবিআর কর্মকর্তাদের শঙ্কা,তাদের পদোন্নতির সুযোগ কমে যাবে। এনবিআরের বিলুপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা মনে করেন,এই সংস্কারের ফলে রাজস্ব খাতে প্রশাসন ক্যাডারের আধিপত্য বাড়বে,সীমিত হতে পারে শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের সুযোগ–সুবিধা ।
একযোগে এনবিআরের এই শাটডাউন ভয়ংকর বিপদ ডেকে এনেছে ব্যবসা বাণিজ্যের জগতে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি ছাড়া কাস্টমস সেবা বন্ধ থাকার নজির কোথাও নেই। এতে রপ্তানি বিলম্বিত হচ্ছে যার ফলে কিছু বিদেশি বায়ার এয়ার শিপমেন্ট বা রপ্তানি আদেশ বাতিলেরও হুমকি দিচ্ছেন। অন্যদিকে পোর্ট ডেমারেজ নির্ধারিত রেটের চারগুণ বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
সরকার যত দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে ততই মঙ্গল। কারণ এই অচলাবস্থার কারণে সময়মতো পণ্য রপ্তানি করা না গেলে বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করতে পারে এবং ভবিষ্যতে নতুন অর্ডার দিতেও অনাগ্রহী হয়ে উঠবে। মনে রাখা দরকার, আন্তর্জাতিক বাজার কখনো বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করবে না, এসব ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে যেতে পারে – যা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বয়ে আনবে অপূরণীয় ক্ষতি।
Comments