প্রায়ই মাথাব্যথা ও ক্লান্তি অনুভব হওয়ার কারণ

সারাদিন অফিসের কাজ, বাসা-বাড়িতে সংসারের বিভিন্ন দায়িত্ব কিংবা সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিন কমবেশি মানসিক চাপ থাকে। এ অবস্থায় বিকেলের দিকে ঘাড় কিংবা কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয়। যা ঘন ঘন হতে থাকে। একপর্যায়ে আর অফিসে যেতে ইচ্ছা করে না। বাসা-বাড়িতেও কাজের আগ্রহ বা শক্তি থাকে না। শুরু হয় ক্লান্তি।
এ ধরনের সমস্যা শুধুই অধিক কাজের চাপের কারণে হয়ে থাকে না। ভিটামিন বি১২-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনের ঘাটতি থেকেও এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে শরীরে 'ম্যাক্রোসাইটিক অ্যানিমিয়া' হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ নিয়েই ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ জয়িতা ব্রহ্ম। তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক এবার।
ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতিকে অবহেলা করা ঠিক নয়। ম্যাক্রোসাইটিক অ্যানিমিয়া হলে রক্তাল্পতায় শরীরে অস্বাভাবিক আকারে লোহিত রক্তকণিকা গঠিত হয়। যা ঠিকমত কাজ করে না। অক্সিজেনও বহন করে না। এ থেকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তৈরি হয়। তখনই দুর্বলতা, হাত-পা কাঁপা, পেশির অসাড়তা, মাথাব্যথা, ঝিমুনির মতো নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
শরীরের জন্য ভিটামিন বি১২ অত্যন্ত উপকারী উপাদান। এর ঘাটতি থেকে রক্তনালিতে থাকা কোষেরও ক্ষতি হয়। শারীরিক অবস্থা শরীরে ফ্রি র্যাডিকেলের মাত্রা বাড়ায়। যা ডিএনএ'র ক্ষতি করে। আবার হোমোসিস্টাইন নামক অ্যামিনো অ্যাসিডের মাত্রাও বাড়ায়, যা রক্তনালির আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর সবমিলে শরীরে তীব্র প্রদাহ তৈরি করে।
প্রয়োজনীয় এই ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত সাপ্লিমেন্ট বা ইনজেকশনের মাধ্যমে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি পূরণ করা হয়। এছাড়া প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সাধারণ কিছু খাবার রাখলেই এর ঘাটতি পূরণ সম্ভব হয়।
পুষ্টিবিদ জয়িতা বলেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ―এই চার উপাদান রাখলে ভালো পরিমাণ ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়। সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারে এসব উপাদান রাখলেই সমস্যা সমাধান সম্ভব। তবে ভেজ বা নিরামিষ খাবারে এসব পুষ্টি উপাদান কম থাকে।
এ জন্য যারা নিরামিষ খাবার পছন্দ করেন, তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি বেশি দেখা দিয়ে থাকে। তারা মাছ-মাংস না খেলেও চাইলে নিয়মিত দুধ খেতে পারেন। ফর্টিফায়েড সয়া মিল্ক, আমন্ড মিল্ক পাওয়া যায় বাজারে, এসবেও ভিটামিন বি১২ উপাদান পাওয়া যায়। তবে এসব পণ্য কেনার আগে অবশ্যই প্যাকেটের লেবেল পড়ে দেখে নিতে হবে। যাচাই করে নিতে হবে, এতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভিটামিন বি১২ যোগ করা হয়েছে কিনা।
Comments