Dance of The Hillary ভাইরাস থেকে বাঁচবেন যেভাবে

বিশ্ব যখন ক্রমেই ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠছে, তখন সাইবার অপরাধও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আরও জটিল ও বিপজ্জনক আকারে। এই সাইবার হুমকির সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে একটি ম্যালওয়্যার। যার নাম দেওয়া হয়েছে Dance Of The Hillary। এটি এমন এক ধরনের সাইবার আক্রমণের অস্ত্র, যা হ্যাকাররা বিশেষভাবে দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকদের টার্গেট করার জন্য ব্যবহার করছে।

Dance Of The Hillary একটি মারাত্মক ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস। যা ভিডিও ফাইল, ডকুমেন্ট অথবা PDF আকারে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে পৌঁছায়। মূলত হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ইমেইল বা অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানো হচ্ছে। ভাইরাসটি একবার চালু হলে এটি ডিভাইসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, যার ফলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংক ডিটেইলস, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি হ্যাকারদের হাতে চলে যেতে পারে।

আক্রমণের কৌশল কীভাবে কাজ করে?

হ্যাকাররা এই ভাইরাসটি ছড়াতে সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট কৌশল ব্যবহার করে-

> ভিডিও বা ডক ফাইল আকারে লুকিয়ে ভাইরাস পাঠানো হয়।
> ভুয়া চাকরির অফার, লোভনীয় ভিডিও অথবা ফাঁদ পাতা ই-মেইলের মাধ্যমে ভাইরাসটি পাঠানো হয়।
> ব্যবহারকারী মাত্র একবার ফাইলটি ওপেন করলেই, ভাইরাস সক্রিয় হয়ে যায় এবং ডিভাইসের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া শুরু করে।
> ডিভাইস থেকে তথ্য চুরি করে, এমনকি দূর থেকে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণও করতে পারে।

নিরাপদ থাকার উপায় কী?
আপনার ডিভাইস ও ব্যক্তিগত তথ্যকে রক্ষা করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচে দেওয়া হলো-

১. অপরিচিত নম্বর বা উৎস থেকে আসা ভিডিও/ডক ফাইল খুলবেন না।
২. হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম-এ অটো মিডিয়া ডাউনলোড অপশন বন্ধ রাখুন।
৩. সন্দেহজনক ইমেইল বা মেসেজের লিংকে ক্লিক করবেন না।
৪. ডিভাইসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রাখার আগে এনক্রিপশন ব্যবহার করুন।
৫. সব অ্যাকাউন্টে দুই ধাপের নিরাপত্তা (Two-Factor Authentication) চালু রাখুন।
৬. নিয়মিত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার আপডেট করুন এবং পূর্ণ স্ক্যান চালান।
৭. কোনও অজানা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আসা চাকরির অফার গ্রহণ করার আগে যাচাই করুন।

এই ভাইরাসের সম্ভাব্য প্রভাব কী হতে পারে?
> ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গোপনীয়তা ভঙ্গ হতে পারে
> ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যেতে পারে
> গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে

'Dance Of The Hillary' ভাইরাস শুধু একটি সাধারণ ম্যালওয়্যার নয়। এটি একটি কৌশলগত সাইবার আক্রমণ যা জাতীয় নিরাপত্তাকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই ডিজিটাল জগতের এই অনিশ্চিত পরিবেশে, প্রতিটি ব্যবহারকারীর উচিত আরও বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়া। প্রযুক্তির সুবিধা উপভোগের পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আমাদের কর্তব্য।