সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স ২৩ করার পক্ষে গণ অধিকার পরিষদ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স ২৫ বছর থেকে ২৩ বছর নির্ধারণ ও সংসদের মেয়াদ চার বছর করার প্রস্তাব দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণ অধিকার পরিষদের এই অবস্থানের কথা জানান দলটির সভাপতি নুরুল হক।
এর আগে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের দেওয়া ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে ১২৭টির সঙ্গে একমত থাকলেও আজকের আলোচনার পর গণ অধিকার পরিষদ নতুন আটটি প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে। এ ছাড়া সাতটি প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত ও ২৩টির সঙ্গে আংশিক একমত হওয়ার কথা জানিয়েছে দলটি।
মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস যথেষ্ট নয় দাবি করে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, একজন সন্তানের লালন–পালনের জন্য নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানোর পাশাপাশি দুই বছর পর্যন্ত তার অফিস সময় অর্ধেক করার প্রস্তাব দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়ায় সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সদস্যের মতামতের পাশাপাশি গণভোটের আয়োজন করারও প্রস্তাব জানায় দলটি।
নুরুল হক বলেন, রাষ্ট্রের সংবিধানের সঙ্গে সাধারণ জনগণের আকাঙ্ক্ষা জড়িয়ে থাকে। সব সংশোধনী নয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের আয়োজন জরুরি। সেই ধারাগুলোও সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদের ক্ষেত্রে গণ অধিকারের অবস্থান হলো, সংবিধান সংশোধন, অর্থ বিল ও আস্থা ভোট ছাড়া অন্য বিষয়গুলোয় সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে অর্থাৎ দলের বিরুদ্ধেও ভোট দিতে পারবেন।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) নাম পরিবর্তন করে জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদ করার প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। নুরুল হক বলেন, বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে একটি নাম সাবলীল নয়।
এনসিসি গঠনে পুলিশ প্রধানকে যুক্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এনসিসি গঠনের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও তিন বাহিনীর প্রধানের পাশাপাশি পুলিশপ্রধানকেও যুক্ত করা জরুরি।
ছাত্রসংগঠন ও শ্রমিক সংগঠন কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করতে পারবে না, ঐকমত্য কমিশনের এমন প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে গণ অধিকার পরিষদ।
এ বিষয়ে নুরুল হক বলেন, আমরা কমিশনকে জানিয়েছি, ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনের পাশাপাশি পেশাজীবী সংগঠনকেও রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি থেকে মুক্ত করতে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। পাশাপাশি কোনো পেশাজীবী সংগঠনের এমন সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে শাস্তির বিধান রাখতে মতামত দিয়েছি।
সংস্কার প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, শুধু আলোচনার মধ্য দিয়েই সংস্কার বাস্তবায়ন হবে না। সবার একত্র থাকার তাগিদ সব সময় জারি রাখতে হবে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
অন্যদিকে গণ অধিকার পরিষদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র ফারুক হাসান, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য খালিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান রিজু, সাকিব হোসেন, দপ্তর সম্পাদক শাকিলুজ্জামান, মানবাধিকারবিষয়ক সহসম্পাদক ফাতেমা দিশা, যুব উইংয়ের সদস্য মুমতাজুল ইসলাম ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
Comments