হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জেনে নিন

হার্ট ডিজিজকে প্রায়ই "নীরব ঘাতক" বলা হয়, কারণ এটি অনেক সময় সুস্পষ্ট উপসর্গ ছাড়াই শরীরে বাসা বাঁধে। প্রতিবছর প্রায় ১.৮ কোটি মানুষ হৃদরোগে মারা যান, যাকে পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় মৃত্যুর কারণ করে তুলেছে। তবে আমাদের শরীর অনেক সময় আগেই কিছু সংকেত দিয়ে দেয়, যেগুলো অবহেলা না করে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। নিচে এমন ৮টি সাধারণ লক্ষণের উল্লেখ করা হলো, যা হার্টের সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে এবং কি করা উচিত, তাও বলা হয়েছে।
১. হঠাৎ দাঁড়ালে মাথা ঘোরা
এটি রক্ত মস্তিষ্কে ঠিকমতো না পৌঁছানোর কারণে হতে পারে, যা হার্টের সমস্যার লক্ষণ। এরকম সমস্যা দেখা দিলে হঠাৎ করে দাঁড়ানো এড়িয়ে চলুন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং সুষম খাবার গ্রহণ করুন। যদি মাথা ঘোরা নিয়মিত হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
২. শ্বাসকষ্ট
শ্বাস নিতে কষ্ট হলে হার্ট সঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে পারছে না, এটি হার্ট ফেলিওরের ইঙ্গিত হতে পারে। অবিলম্বে হার্টের চেক-আপ করান। নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করুন।
৩. নিচু হতে সমস্যা হওয়া
ছোট ছোট কাজেও যদি ক্লান্তি লাগে বা নিচু হতে অসুবিধা হয়, তবে সেটা অক্সিজেনের ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে। এ সমস্যার জন্য ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন।
৪. হার্টবিট বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়া (পালপিটেশন)
চাপ, অ্যারিথমিয়া, বা অতিরিক্ত স্ট্রেস হরমোনের কারণে এটি হতে পারে। এটি যদি ঘন ঘন হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্ট্রেস কমানোর জন্য মেডিটেশন বা হালকা ব্যায়াম করুন।
৫. বুক চেপে ধরা
বুকে চাপ ধরা অ্যাঞ্জাইনা বা হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাস হতে পারে। যদি এই অনুভূতির সঙ্গে হাতে বা জও-তে ব্যথা হয়, অবিলম্বে চিকিৎসা নিন। নিয়মিত হার্টের স্ক্রিনিং করান।
৬. বাহু বা গলার ব্যথা
হার্ট থেকে স্নায়ুর মাধ্যমে এই ব্যথা উপরের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদি ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বা বুকের অস্বস্তি থাকে, জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিন।
৭. বুকে অস্বস্তি
ব্লকড আর্টারির কারণে এই অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। ঘন ঘন হলে ইসিজি বা স্ট্রেস টেস্ট করে নিন।
৮. হার্টবিট মিস হওয়া বা অতিরিক্ত হার্টবিট হওয়া
এটি অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন বা অন্যান্য জটিলতার ইঙ্গিত হতে পারে। নিয়মিত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। জীবনধারায় পরিবর্তন, ওষুধ বা প্রয়োজন হলে বিশেষ চিকিৎসা নিন।
মনে রাখবেন হার্ট ডিজিজ প্রতিরোধযোগ্য, যদি আগেভাগে সতর্কতা নেয়া যায়। শরীরের সংকেতগুলো উপেক্ষা না করে সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
Comments