৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ২০২৪ সালে

দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা, ডলার সংকট এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে ২০২৪ সালে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম নেট বৈদেশিক সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে বাংলাদেশে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে মোট নেট এফডিআই এসেছে ১.২৭ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩.২৫ শতাংশ কম। ২০২৩ সালে এই অঙ্ক ছিল ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার কমেছে এফডিআই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২১ সালে দেশে নেট এফডিআই এসেছিল ১.৫৭ বিলিয়ন ডলার, এরপর থেকে প্রতি বছর আগের বছরের তুলনায় এফডিআই কমেছে। সবমিলিয়ে, ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিএমপি৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, রিভাইজড ডেটা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালে এসেছে সবচেয়ে কম এফডিআই। ২০০০ সালের আগের তথ্য বিএমপি৫ ম্যানুয়াল অনুসারে সংরক্ষিত হওয়ায় সেগুলোর সঙ্গে তুলনা সম্ভব হয়নি।
২০২৪ সালে আসা মোট এফডিআইয়ের মধ্যে ৬২২ মিলিয়ন ডলার ছিল রিইনভেস্টেড আর্নিংস—অর্থাৎ পুরনো বিনিয়োগ থেকে আয় আবার বিনিয়োগ করা। এটি মোট এফডিআইয়ের প্রায় ৪৯ শতাংশ। এছাড়া, ইক্যুইটি ক্যাপিটাল এসেছে ৫৪৫ মিলিয়ন ডলার এবং ইন্ট্রা-কোম্পানি লোন বা আন্তঃকোম্পানি ঋণ এসেছে ১০৪ মিলিয়ন ডলার।
রিইনভেস্টমেন্ট কেন বেশি জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, "বাংলাদেশে বিনিয়োগে রিটার্ন ভালো। তবে বিনিয়োগকারীরা অনেক সময় ডলার সংকট ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার কারণে আয় ফিরিয়ে নিতে পারেন না, তাই বাধ্য হয়ে পুনঃবিনিয়োগ করেন।"
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে ব্যাংকিং খাতে—৪১৬ মিলিয়ন ডলার। এরপর রয়েছে টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাত—৪০৭ মিলিয়ন ডলার। ওষুধ ও রাসায়নিক, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি এবং খাদ্য খাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ এসেছে।
এদিকে, চলতি এপ্রিলে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) ও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটি (বেজা) যৌথভাবে 'বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫' আয়োজন করে।
বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, এই সামিটে ৫০টি দেশের ৪১৫ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেন এবং এই আয়োজন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে।
Comments