ভোলায় মাদক, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী বন্ধে স্থানীয়দের মানববন্ধন

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মাদক, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও জলদস্যুতা বন্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন হাসান নগর ইউনিয়নের বাসিন্দারা। রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে উপজেলার হাসান নগর ইউনিয়নের মির্জাকালু (কাজিরহাট) বাজারে হাসান নগর ইউনিয়ন সামাজিক উন্নয়ন পরিষদ ও শান্তিকামী জনগনের ব্যানারে এ মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ শেষে মির্জাকালু বাজারে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা গত ১৫ এপ্রিল ওই ইউনিয়নের মির্জাকালু বাজারে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে হামলার শিকার হওয়া সিব্বির খন্দকার ও মমিন খন্দকারের ওপর হামালর বিচারের দাবি জানান।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, হাসান নগর ইউনিয়নটি মেঘনা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় এখানে মাদক, চোরাচালান, জলদস্যুতা, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির জন্য মূল যায়গায় পরিনত হয়েছে। গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যেতো। এখানকার বাসিন্দারা নিরবে চোখের পানি ফেললেও সে সময় কোনো বিচার পায়নি। গত ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর চেয়ারম্যান আবেদ চৌধুরী পালিয়ে গেলে এখানকার মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। কিন্তু কয়েক দিন পর দেখা গেলো যেই সন্ত্রাসীরা আবেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সময়ে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি করতো তারাই নেতৃত্ব পরিবর্তন করে পুনয়ার বীরদর্পে এ সকল অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান আবেদ চৌধুরীর চাচা সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এ সকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। জসিম উদ্দিন চৌধুরী নিজেকে বিএনপির নেতা দাবি করলেও তার কোনো পদ পদবী নেই।

এদের এ সকল অপকর্মের প্রতিবাদ করায় গত ১৫ এপ্রিল স্থানীয় মির্জাকালু (কাজিরহাট) বাজারে যুবদল নেতা সিব্বির খন্দকার ও তার ভাই মমিম খন্দকারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনয়া থানায় মামলা হলেও আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। জসিম উদ্দিন চৌধুরী মির্জাকালু বাজারে জলদস্যুদের দিয়ে মহরা দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে। ব্যবসায়ীরা ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায় না। তাই এ সকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধে স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ সমাবেশ করছে। এর পরও যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করা না হয় তাহলে স্থানীয় মানুষ একত্রিত হয়ে এ সকল সন্ত্রাসীদের রুখে দিবে।
প্রতিবাদ সভায় হাসান নগর ইউনিয়ন সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের আহবায়ক মুফতি ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন স্থানীয় বাসিন্দা ও খেলাফত মজলিসের পল্টন থানার জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি মো. যোবায়ের হোসেন তাছলিম, ইউনিয়ন যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা আব্বাস উদ্দিন, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহবায়ক মো. মমিন খন্দকার, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি আজাদ ভুঁইয়া প্রমুখ।
এ বিষয়ে হাসান নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি এখন বিএনপির কোনো পদ পদবীতে নেই। তিনি শুধু বিএনপির একজন সমর্থক। রাজনৈতিক কোনো কাজে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহনও করেন না। সম্প্রতি ইউনিয়ন যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে তার ছেলে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. নাইম চৌধুরীর সঙ্গে যুবদলকর্মী শিব্বিরের বিরোধ তৈরী হয়। নতুন সভাপতি মন্নান সিকদারের পক্ষে ছিলেন তার ছেলে নাইম ও সাবেক সভাপতি আজাদ ভুইয়ার পক্ষে ছিলেন শিব্বির। এই বিরোধের জেরে তার ছেলেকে বাজারে মারধর করে শিব্বির ও তার ভাই মমিন। পরে তার আত্মীয়স্বজন মিলে শিব্বিরের ওপর হামলা করে। এতে শিব্বির আহত হয়। এতে তার কোনো সম্পৃক্তবা ছিলো না। এখন তাকে শুধু শুধু দোষারোপ করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, সাবেক চেয়ারম্যান আবেদ চৌধুরী তার ভাতিজা হওয়ায় তার বংশের অনেক বিএনপি নেতা নির্বাচনের সময় আবেদ চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছে। এর জন্য দল তাদেরকে বহিষ্কার করেছে। এখন ওই সকল বিএনপির নেতাকর্মীরাদেরকেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে।
Comments