এশিয়ার কৃষি প্রধান দেশগুলোর আলোকে কৃষি গবেষণা ত্বরান্বিত ও বেগবানের লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার

বাংলাদেশে খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষার কৃষি গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং গেল তিন দশকে কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এ উন্নয়নে ভূমিকা পালন করেছে।
কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারন সরকারি সংস্থা হিসাবে ৭০ এর দশকের আগে কাজ শুরু করলেও মেধা আকর্ষণ করে অধিকতর বিকাশের লক্ষ্যে গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমুহ স্বায়ত্বশাসিত হিসাবে কাজ করে চলেছে। কালের পরিবর্তনে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, অনাকর্ষণীয় চাকুরী কাঠামো ও অসম সামাজিক মর্যাদার কারনে মেধাবী গবেষকগণ অন্য সার্ভিসে বা বিদেশ চলে যাচ্ছে যা উদ্ভেগজনক। পাবলিক কৃষি গবেষণা ব্যবস্থা বর্তমানে অনুপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দ্বারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটি দেশের আগামীর খাদ্য পুষ্টি নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলবে এবং কৃষি থেকে উৎপাদক মুখ ফিরায়ে নিবে।
এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয় এবং অত্যন্ত উচ্চ জনঘনত্ব সহ অতি নিবিড় চাষাবাদ কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। কৃষি-পণ্য আমদানির উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা অর্থনীতিকে চাপে ফেলছে। ইতিমধ্যে বেসরকারি সংস্থা বীজ, যন্ত্রপাতি, বালাইনাশক ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে। কৃষিকে আরও উৎপাদনশীল, লাভজনক এবং জবাবদিহি করার জন্য জাতীয় স্বার্থে জাতীয় পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দূর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ধান-ভিত্তিক এশিয়ার দেশগুলোর কৃষি গবেষণা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে এবং প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভাবন সনাক্ত করে বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত উদ্ভাবন বেছে নেয়ার লক্ষ্য থেকেই এই প্রবন্ধটি লেখা। এতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া দেশগুলোতে গবেষণা, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভাবন এবং গবেষণা বাণিজ্যিকীকরণ সম্পর্কিত বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
এই প্রবন্ধটিতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, প্রতিবেদন এবং ওয়েবসাইট সহ বিভিন্ন তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। কৃষি গবেষণা ব্যবস্থাপনার গতিশীল প্রকৃতির কারণে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া যেতে পারে এমন নীতিগুলি তুলে ধরার জন্য cross country তুলনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে একটি জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম (NARS) রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC) সমন্বয়ক হিসাবে মোট ১৩ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই কাঠামো বেশ জটিল, অসম এবং পাঁচটি মন্ত্রণালয়ে বিস্তৃত; কিছু স্বায়ত্তশাসিত, অন্যগুলি সরকারি বিভাগ, যা সুষ্ঠ পরিচালনার জন্য অন্তরায়। এর মাঝে বিজ্ঞানী সংখ্যা হিসাবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ববৃহত যা প্রায় দুইশটির বেশী ফসলের উপর কাজ করছে বলে তথ্যসূত্রে জানা যায়। তাছাড়া, দেশব্যাপি প্রতিষ্ঠানসমুহের প্রচুর স্টেশন রয়েছে।
NARS একটি গভর্নিং বোর্ড (GB) দ্বারা পরিচালিত হয়, যা অত্যন্ত শক্তিশালী বলে বিবেচিত মনে হলেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহনের পর তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের জন্য তার অধিকাংশই আর বাস্তবায়ন হয় না।
কৃষি গবেষনা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভাবন হিসাবে ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কোম্পানি আইনের অধীনে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেশের কৃষি ব্যবস্থায় চটজলদি সমস্যা সমাধান করে উৎপাদনে সহায়তা করার লক্ষে কেজিএফ কাজ করবে বলেই এর সৃষ্টি। এর অনেকগুলো উদ্দেশ্যের মধ্যে গবেষণায় সরকারি-বেসরকারি, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদিকে সহায়তা প্রদান করা একটি। আজকের কৃষি গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে গবেষণায় মেধা, দক্ষতা বৃদ্ধি করে এর মান উন্নয়নের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কেজিএফ এমন নানাবিধ কর্মকান্ড গ্রহন করে সক্ষম পরিবেশ তৈরি করাও এর অন্যতম দায়িত্ব। কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় নীতি বিষয়ক গবেষনা দেশে অনেকটাই অবহেলিত যা মনোযোগের দাবী রাখে। ইদানিং ফাউন্ডেশন অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য উপেক্ষা করে গবেষণা অনুদান নির্ভর Low Hanging fruit harvest" করছে বলে ধারনা হয়।
সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা একটি পরিচালনা কমিটি এটি পরিচালনা করে। তবে, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অভাব এবং elite capture এর কারনে পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
এশীয় দেশগুলো দেশের চাহিদা পূরণের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতি করে চলেছে। দেশগুলোতে তিন ধরনের মডেল দেখতে পাওয়া যায়- যেমন কাউন্সিল, ডিপার্টমেন্ট, একাডেমি বা মিশ্রণ মডেল। সরকারী বিভাগ বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সমুহের অধীনে প্রতিষ্ঠানগুলো একটি একীভূত পরিষেবা কাঠামোর অধীনে পরিচালিত হয় এবং সিভিল সার্ভিস কমিশন বা স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ দ্বারা বৈজ্ঞানিক কর্মীদের নিয়োগ করে। পাকিস্তান, ভারত, চীন এবং ফিলিপাইন মেধা যোগ্যতা ধরে রাখতে এবং পরিষেবাগুলো কে আকষর্নীয় করার জন্য প্রণোদনা কাঠামো চালু করেছে। ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালে শীর্ষ ব্যবস্থাপনা পদগুলি একটি সার্চ কমিটির মাধ্যমে মেয়াদী সময়ের জন্য নিযুক্ত করা হয়। প্রয়োজনের দিক লক্ষ্য রেখে ইদানিং এশিয়ার দেশ সমুহে Post harvest processing, horticulture, mechanisation, policy research, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমুহ সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশগুলো থেকে নিম্ন বর্নিত বিষয়গুলো সংক্ষিপ্ত ভাবে উল্লেখ করা হলো:
* ভারত: ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (ICAR) একটি সোসাইটি আইনের আওতায় সৃষ্টি, যা কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিভাগের (DARE) সাথে সংযুক্ত হয়ে একটি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ মডেল হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে। ICAR এর ৭০টির বেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বেশ কয়েকটি অধিদপ্তর, কেন্দ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্বাধীন নিয়োগ কর্তৃপক্ষের দ্বারা নিয়োগ দান করা হয়। যোগ্য বিজ্ঞানীদের জন্য একটি ক্যারিয়ার উন্নয়ন বা পদোন্নতির ব্যবস্থা রয়েছে। বেশ কয়েকটি স্কিমের মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের প্রনোদনা দেয়া হয়। ICAR-এর মহাপরিচালকের পদকে সরকারের সচিব (DARE) পদে উন্নীত করা হয়েছে। সিস্টেমে বেশ কয়েকটি উদ্ভাবন করা হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করার মতো হল-কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র (KVK) যা কৃষক, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় /ICAR এর সমন্বয়ে প্রযুক্তি বিনিময়ের একটি প্ল্যাটফর্ম যা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত। বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে জড়িত করে দেশের বিভিন্ন গবেষণার উপর সর্বভারতীয় সমন্বিত গবেষণা কর্মসূচি চালু রয়েছে।
* পাকিস্তান: দুটি ধারা বিদ্যমান- খাদ্য নিরাপত্তা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফেডারেল সরকারের অধীনে পাকিস্তান কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (PARC) এবং প্রাদেশিক সরকারের অধীনে কৃষি ডিপার্টমেন্টভুক্ত সরকারি ইন্সটিটিউট। উভয় ব্যবস্থার অধীনে প্রতিষ্ঠানগুলির একীভূত পরিষেবা কাঠামো রয়েছে এবং বাণিজ্যিকীকরণসহ গবেষনায় প্রনোদনা প্রবর্তন দেয়া হচ্ছে। অ্যাগ্রোটেক কোম্পানি (PATCO), PARC ব্যবস্থার অধীনে গবেষণা ফলাফল বাণিজ্যিকীকরণ করে।
* শ্রীলঙ্কা: কৃষি বিভাগ (DoA), কৃষি মন্ত্রণালয় অন্তর্ভুক্ত গবেষণা ও সম্প্রসারণকে একটি কর্তৃপক্ষের অধীনে একীভূত করে সমন্বয় এবং প্রযুক্তি প্রচার বৃদ্ধি করে।তাছাড়া, রাবার, চা, আখ, নারিকেল, প্রানীসম্পদ গবেষনা ভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত।
* নেপাল: কৃষি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেপাল কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (NARC) নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। নির্বাহী পরিচালক বিজ্ঞানীদের বিদেশে পেশাদার প্রশিক্ষণ অংশগ্রহণে অনুমোদন সহ প্রতিষ্ঠানগুলির তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা করেন।
* ইন্দোনেশিয়া: ২০২২ সালে, গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিকে জাতীয় গবেষণা ও উদ্ভাবন সংস্থা (BRIN) এর সাথে একীভূত করা হয়েছিল, সমস্ত গবেষণা কার্যক্রমকে (Energy, health, atomic ইত্যাদি) একটি একক জাতীয় সত্তার অধীনে একত্রিত করে এবং দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে জবাবদিহি করে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পূর্ববর্তী ব্যবস্থার এখন সীমিত কার্যকারিতা রয়েছে।
* থাইল্যান্ড: কৃষি বিভাগ (DoA) কৃষি ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে, পর্যালোচিত দেশগুলির মধ্যে কৃষি গবেষণায় সর্বোচ্চ অর্থ ব্যয় করে। অন্যান্য ব্যবস্থার তুলনায় এদেশে ইনস্টিটিউট সংখ্যা কম, যেখানে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ARDA) সম্পদ বরাদ্দ, বিদেশী সহযোগিতা এবং পরিবিক্ষন জন্য সমন্বয়কারী সংস্থা। DoA ফসল গবেষণা ও সম্প্রসারন করে এবং ২০০৯ সালে একটি পৃথক ধান ডিপার্টমেন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। থাইল্যান্ড রিসার্চ ফান্ড (TRF) ১৯৯২ সালে গবেষণা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কৃষি গবেষণার একটি তথ্য ভান্ডার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি কৃষি গবেষণার ডাটাবেস তৈরি এবং সংহত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
* ফিলিপাইন: কৃষি গবেষণা ব্যবস্থা জটিল, যার মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (DOST) এবং কৃষি মন্ত্রণালয় (DA) জড়িত। DA-তে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যা কৃষি গবেষণা ব্যুরো (BAR) এর মাধ্যমে গবেষণা পরিচালনা ও পরিবীক্ষন করে। পোস্টহার্ভেস্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মেকানাইজেশন (PHilMech) অন্যান্য অনেক কেন্দ্রের মধ্যে একটি যা গবেষনা ফলাফল বানিজ্যিকরনের দায়িত্বে রয়েছে।
DOST-এর অধীনে ফিলিপাইন কাউন্সিল ফর এগ্রিকালচার, অ্যাকুয়াটিক, ফরেস্ট্রি, অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (PCAARRD)-এর একটি আঞ্চলিক সংগঠন নিয়ে কনসোর্টিয়াম রয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আঞ্চলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিকে সংযুক্ত করে।
২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত "কৃষি প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি তহবিল" (R&D অনুদান)প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রযুক্তি বাণিজ্যিকীকরণ এবং গবেষণা সুবিধাউন্নয়ন করা এর দায়িত্ব। ১৯৯৮ সালে পাস হওয়া ম্যাগনা কার্টা আইন উচ্চশিক্ষাসহ বিজ্ঞান পেশাদারদের জন্য নানাবিধ প্রণোদনা প্রদান করে।
চীন: চাইনিজ একাডেমি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস (CAAS) হল কৃষি ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (MARA) সাথে সম্পর্কিত একটি বিস্তৃত জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম। প্রাদেশিক পর্যায়ে আরেকটি সিস্টেম বিদ্যমান। CAAS বিস্তৃত গবেষণা নেটওয়ার্ক তত্ত্বাবধান করে এবং বিদেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে।গবেষনায় গতিশীলতায় বেসরকারি গবেষণার পাশাপাশি বিভিন্নরকম কর্মসূচী রয়েছে।
কৃষি গবেষণা দক্ষতা এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য এশীয় দেশগুলির অভিজ্ঞতা ও good practice দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের আগামীর চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে বাংলাদেশের একটি কাঠামোগত সংস্কার গ্রহণ করা উচিত।
১. প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং শক্তিশালীকরণ — একটি ঐক্যবদ্ধ NARS গভর্নেন্স কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা এবং গবেষণা নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে BARC-এর ভূমিকা জোরদার করা।
২. মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা – এশিয়ার অভিজ্ঞতার আলোকে কৃষি গবেষণা সার্ভিস (ARS) এর অনুরূপ ক্যারিয়ার অগ্রগতি স্কিম বাস্তবায়ন করা। কর্মক্ষমতা-ভিত্তিক প্রণোদনা এবং যোগ্যতা-ভিত্তিক পদোন্নতি প্রবর্তন করা
৩. নিয়োগ - একটি স্বাধীন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে NARS বিজ্ঞানীদের নিয়োগ করা। নেতৃত্বের গুনাবলি বিবেচনা করে BARC গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক একটি অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে শীর্ষ ব্যবস্থাপনা পদগুলি স্থায়ী করা হবে।
৪. প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা
৫. পোস্ট হারভেস্ট, যান্ত্রিকীকরণ, উদ্যান, আর্থ-সামাজিক গবেষণা, IPR এবং প্রযুক্ত বাণিজ্যিকীকরণ সহ নতুন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা।
৬. কার্যকর এবং অধিকতর জাবাবদিহিতার লক্ষে গুরুত্বপূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমুহ সরকারি ডিপার্টমেন্টে রুপান্তরের বিষয়ে রিভিউ করা।
৭. দেশের সামগ্রীক গবেষণা সক্ষমতা বিবেচনা করে ঘাটতি বা উদীয়মান বিষয়ে KGF গবেষণা সহায়ক কর্মসুচী গ্রহন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখতে পারে। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধি ঘটনা সম্ভব। উন্নত ব্যবস্থাপনা ও স্বাধিনভাবে কাজ করার জন্য KGF একটি স্বতন্ত্র পরিবেশে অবস্থিত হওয়া বাঞ্চনীয়।
৮. বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা সিস্টেম ব্যবস্থাপনার বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে। যোগ্য লিডারশিপের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
উৎপাদন ব্যাবস্থাপনার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল এবং প্রতিযোগিতামূলক কৃষি খাত গড়ে তুলতে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন করে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।
ওয়ায়েস কবীর, পি.এইচ.ডি, প্রাক্তন নির্বাহী চেয়ারম্যন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল
Comments