ভোজ্য তেল বাজারে সিন্ডিকেটের দাপট?

ভোজ্য তেলের বাজারে অস্থিরতা কাটছে না। আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে আবারও এই অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকারের দিক থেকে ব্যবস্থা ঠিকই নেয়া হয়েছে। রোজা উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
বিশেষ করে রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছোলা,খেজুর,চিনি,মটর ডাল,সয়াবিন তেল ও ফলসহ পণ্য আমদানি হয়েছে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গত জানুয়ারির চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে। অথচ অনেক জায়গায়ই সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না।
তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করছে তারা সরবরাহ বাড়িয়েছে। কিন্তু এরপরও বাজারে ভোজ্য তেলের তীব্র সংকট কাটছে না। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের তেলের বোতলের জন্য এখন তীব্র হাহাকার। তেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর দাবি উড়িয়ে দিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন,কোম্পানিগুলি চাহিদার তুলনায় কম তেল সরবরাহ করছে।
প্রয়োজনীয় আমদানি হয়েছে, সরবরাহও ঠিক আছে, তাহলে বোতলজাত ভোজ্য তেল পাওয়া যাচ্ছে না কেন? সহজেই বোঝা যাচ্ছে , বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের আগে সয়াবিন তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহকারী এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটা ঐক্যমতের ভিত্তিতে হয়তো এই সংকট তৈরি করা হয়েছে, যার অপর নাম সিন্ডিকেট।
এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা লিটারপ্রতি অতিরিক্তি ১৫-২০ টাকা দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। গত ৯ ডিসেম্বর থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হয় ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু সেটা ব্যবসায়ীরা মানছেন না। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট কৃত্রিম চলছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন জানিয়েছে,ভোজ্য তেল আমদানিতে বেড়েছে ৩৫ শতাংশ, তার সঙ্গে বেড়েছে ঋণপত্র (এলসি) খোলাও। জানুয়ারিতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে বলেও জানিয়েছে কমিশন।
ট্যারিফ কমিশনের আশ্বাস সত্ত্বেও আশ্বস্ত হতে পারছে না ভোক্তা ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। দোকানগুলোতে তেল সরবরাহে সংকট পরিস্থিতি কাটছে না। বেশিরভাগ দোকানে এক ও দুই লিটার বোতলজাত তেল পাচ্ছে না ক্রেতারা। কোম্পানি ও ডিস্ট্রিবিউটরদের কারসাজিতে ভোক্তাদের পকেট কাটা হচ্ছে ভরে মনে করে ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো।
Comments