চুরি যাওয়া সম্পদ ফেরত পেতে সহায়তা চাইলেন ড. ইউনুস
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের চুরি যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বিদেশী বন্ধুদের সহায়তা চেয়েছেন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে গতকাল বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনে এ সহায়তা কামনা করেন। বৈঠকের আলোচনা সম্পর্কে পরে সাংবাদিকদের জানান প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। খবর বাসস।
গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলে বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ও দিবালোকে ডাকাতি হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এসব কীভাবে সংঘটিত হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখার জন্য তিনি শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ, থিঙ্কট্যাংক, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে বাংলাদেশে পাঠাতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার পরিকল্পনা এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা সম্পর্কে বিশ্বনেতাদের অবহিত করেন।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার স্টাবের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, 'শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে ব্যাংক খাতে বিপুল পরিমাণ লুটপাট ও দুর্নীতি হয়েছে। ব্যাংক থেকে লুট করা হয়েছে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার।' আলেক্সান্ডার স্টাবের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার সরকার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করবে। এর মাধ্যমে শরণার্থীদের দুর্দশা আবারো বৈশ্বিক আলোচনায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করে তার সরকার।
বৈঠকে তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে গ্লোবাল সাউথের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা, রোহিঙ্গা সংকটসহ গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমাদের এমন পৃথিবী দরকার, যা হবে আইনের শাসনভিত্তিক।'
ড. ইউনূস ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টকে অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করেন। তখন আলেক্সান্ডার স্টাব বলেন, 'আমি আপনাদের জন্য শুভকামনা জানাই।' প্রেসিডেন্ট স্টাব গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
ডব্লিউইএফ সম্মেলনে যোগ দিতে চারদিনের সরকারি সফরে গত সোমবার দাভোসে যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সম্মেলনের ফাঁকে গতকাল তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা পারস্পরিক শুভেচ্ছা ও কুশলাদি বিনিময় করেন।
Comments