আস্থাভোটে ফরাসি পার্লামেন্টে সরকারের পতন

বুধবার ফরাসি পার্লামেন্টে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ার। আস্থাভোটে সরকার ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ৫৭৭ পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে ৩৩১ জন তার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। ফলে ভেঙে পড়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে মিশেল বার্নিয়ারকে।
মিশেল ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর শিবিরের রাজনীতিবিদ। তার নেতৃত্বে যে সরকার গঠিত হয়েছিল, তা ছিল মাখোঁপন্থি সরকার। বুধবারের এই আস্থাভোটের পর এবার বামপন্থি দলগুলো মাখোঁর পদত্যাগ দাবি করতে শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য, এই ভোটে স্পষ্ট হয়েছে, মাখোঁর প্রতিও পার্লামেন্টের সমর্থন নেই।
গত ৫ সেপ্টেম্বর মিশেলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন মাখোঁ । ১৯৫৮ সালের পর এই প্রথম এত কম সময় কোনো ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকলেন।
ফরাসি পার্লামেন্টে এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোনো জোটের কাছেই সরকার গঠনের মতো যথেষ্ট আসন নেই। যার ফলে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পরিস্থিতির উদ্রেক হয়েছে। এদিকে গ্রীষ্মের আগে আবার নির্বাচনের আয়োজনও সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতিতে যিনি ক্ষমতায় আসবেন তারই অবস্থা মিশেলের মতো হবে। আস্থাভোট হলেই ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। অর্থাৎ, সবাই মিলে একটি সংখ্যালঘু সরকারের দায়িত্ব নিতে হবে। ফলে দ্রুত এই সঙ্কটের মীমাংসা হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। আর এই সমস্যার সমাধান না হলে নতুন প্রধানমন্ত্রী পাওয়াও মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।
মাখোঁ অবশ্য খুব দ্রুতই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তার ভাষণ দেওয়ার কথা। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার ফরাসি সময় রাত ৮টায় টেলিভিশনে ভাষণ দেবেন প্রেসিডেন্ট। বুধবারই তিনি সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন।
তবে মাখোঁ পরবর্তী কর্মসূচি কী ঘোষণা করবেন, সে বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত দেয়নি প্রাসাদ।
বামপন্থিরা মাখোঁর পদত্যাগ দাবি করলেও অতি দক্ষিণপন্থি নেত্রী লে পেন এখনই মাখোঁর পদত্যাগ দাবি করছেন না। তার বক্তব্য, বুধবারের ভোটকে তারা জয় হিসেবে দেখছেন না। আর কোনো উপায় ছিল না বলেই বুধবার আস্থাভোটের সামনে সরকারকে দাঁড় করাতে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
তার বক্তব্য, এই সমস্যা থেকে বার হওয়ার এখন একটাই পথ খোলা রয়েছে, নতুন করে ভোটের ব্যবস্থা করা। লে পেন মনে করেন, মাখোঁও আর বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
Comments