উল্লাপাড়ায় মৎস্য অভয়াশ্রমে নিরাপদে নেই মাছ
দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মৎস্য অফিস থেকে ৬ টি অভয় আশ্রম নির্মাণ করা হয়। এসব অভয়াশ্রমে মৎস্য নিধনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাগুর, শিং, শোল, বোয়াল, ট্যাংরা, বাইম, রিটা ও পাবদাসহ দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ রক্ষার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দেশীয় বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ রক্ষা তো দূরের কথা, অভয়াশ্রমই রক্ষা করতে পারছে না মৎস্য অফিস।
উপজেলার ঘাটিনা, পালপাড়া, সোনতলা, মোরদহ, দহকুলা, মোহনপুরে মৎস্য অফিসের অর্থায়নে ২০২০ সালে অভয়াআশ্রম নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর সরকারি বরাদ্দ থাকে এগুলো মেরামত করার জন্য। কিন্তু উপজেলা মৎস্য অফিস নামমাত্র মেরামত করলেও সারাবছর কোন খোঁজখবর থাকে না, অভয়াশ্রমে নিয়মিত মাছ শিকার করছে অসাধু মৎস্য শিকারী। এতে মাছের সঙ্গে মৎস্য অভয়াশ্রমও এখন নিশ্চিহ্নের পথে।
রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তার পর্যাপ্ত অভাবে ১০ টির মধ্যে চারটি অভয়াশ্রমের কার্যকারিতা এখন আর নেই। কাগজে-কলমে যে ছয়টি অভয়াশ্রম রয়েছে, সেগুলোরও কোনো রক্ষণাবেক্ষণ নেই। আবার কোনোটির রক্ষকই ভক্ষক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানা যায় , এসব অভয়াশ্রমে ঢেলা, সরপুঁটি, বামুস, গুলশা, পাবদা, রানি, বাঘাইড়, বোয়াল, বাইম, চেলা, চাপিলা, গাগলা, পুটা, রিটাসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষার জন্য মৎস্য নিধন সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়। এমনকী স্থানীয় পর্যায়ে সুফলভোগীদের নিয়ে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এসবের তদারকি করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া কেউ যাতে মাছ শিকার করতে না পারেন, সেজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করাও হয়। কিন্তু কাগজে-কলমে এসব নীতিমালা থাকলেও বাস্তবে তার চিত্র পুরো উল্টো। কেবলমাত্র একটি সাইনবোর্ড সাঁটানো ছাড়া মৎস্য অভয়াশ্রম রক্ষায় আর দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অভয়াশ্রম থেকে নির্বিচারে মাছ শিকার করছেন স্থানীয়রা। মাছ লুটের সঙ্গে অভয়াশ্রম রক্ষা কমিটিরও অনেক সদস্য জড়িত থাকার খবর পাওয়া গেছে।
শাহজাহানপুর স্থানীয় রাকিবুল ইসলাম সুমন জানান মৎস্য অভয়াশ্রমের শুধুমাত্র একটা সাইনবোর্ড রয়েছে, মৎস্য অফিসের তদারকি না থাকায় দূরদূরান্ত থেকে মানুষ সিপ দিয়ে মাছ ধরতে আসে, এছাড়াও অসাধু লোকজন কারেন্ট জাল, চায়না জাল দিয়ে নিয়মিত মাছ শিকার করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান জানান তারা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করছে এরআগে ও জাল পুড়িয়ে দিয়েছে। এবং গত কাল ৪ টি হুইল ছিপ বড়শি জব্দ করা হয়েছে। তারপরো যদি তারা এরকম ভাবে মাছ ধরে তাহলে প্রতিদিন সেখানে অভিযান চালানো হবে। তবে তিনি আরো জানান মৎস্য অভয়াশ্রম রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের।