সহকর্মীদের সঙ্গে যেসব বিষয় নিয়ে আলাপ করা উচিত নয়
একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে সবারই একটি সুসম্পর্ক হয়ে উঠে। অনেক সময় তা সহকর্মী থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়েও চলে যায়। আবার সুসম্পর্কের কারণে ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয় সহকর্মীর সঙ্গে। কিন্তু কখনো কখনো কিছু পরিস্থিতিতে বুঝতে পারবেন, সহকর্মীর সঙ্গে বেশি সখ্যতা বোধ হয় ঠিক হয়নি।
সাধারণত সহকর্মীর সঙ্গে ঠিক কী বা কোন কোন বিষয়ে আলোচনা করতে হবে, তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। এ কারণে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন। যা একটা সময় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিজের পরিবারের ক্ষেত্রে যেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা থাকে, একইভাবে আবার কর্মস্থলের জন্যও অনেক সময় প্রভাব ফেলে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে চাকরিচ্যুত হওয়ারও ঝুঁকি থাকে।
কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে কোন কোন বিষয় নিয়ে কথা বলা মোটেও ঠিক নয়, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। এবার তাহলে সেসব বিষয় জেনে নেয়া যাক।
আর্থিক তথ্য: অর্থ সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। এসব নিয়ে সহকর্মীর সঙ্গে আলাপ করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কখনো কোনো ক্ষেত্রে আলোচনায় উঠে এলেও কৌশলে নিজের আর্থিক বিষয় এড়িয়ে যাবেন। কেননা, আপনার বেতন, বিনিয়োগ ও ঋণ―এসব প্রায়ই অফিসের কাজে অপ্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করবে। এমনকি সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কও নষ্ট হতে পারে।
স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়: অফিসে আপনার কাজের গতি কমে যাওয়া বা উৎপাদনশীলতা ও ছুটির ক্ষেত্রে অনেক সময় এর ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। আপনি স্বাস্থ্যগত সমস্যা জানালে হয়তো সহানুভূতি পাওয়ার আশায় এ নিয়ে কথা বলবেন। কিন্তু অনেক সময় এর থেকে হিতে বিপরীত হয়। এ জন্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যগুলো অন্যের সঙ্গে ভাগ করবেন না। আপনি প্রয়োজনে ম্যানেজারের সঙ্গে সমস্যা সমাধন নিয়ে কথা বলুন এবং তা মানব সম্পদ বিভাগে কথা বলে সামঞ্জস্য করার পরিকল্পনা করুন।
রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাস: কর্মক্ষেত্রে রাজনীতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে কথা বলা সবচেয়ে বড় ভুল। অনেক সময় এসব ক্যারিয়ারকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে থাকে। আপনি কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন, কেন করেন এবং কোন ধর্মে বিশ্বাস, তা একমাত্র নিজের মধ্যে রাখুন। সহকর্মীদের সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করলে তারা হয়তো মতামত জানাবে। তা থেকে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ সৃষ্টি হতে পারে। আবার আপনিও অনুভূতিতে আঘাত পেতে পারেন। রাজনীতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে কথা না বলাই উত্তম।
সহকর্মী এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য: কিছু কিছু অফিসে এমন কয়েকজন কর্মী থাকেন, যারা কাজ করলেও পাশাপাশি নেতিবাচক কথা বলেন। এসবে যুক্ত হলে অধিকাংশ সময়ই ফলাফল খারাপ হয়। সহকর্মীকে নিয়ে খারাপ বা নেতিবাচক মন্তব্য করলে তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। আর একপর্যায়ে সেই সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক বিষাক্ত হয়ে যায়। একইভাবে অফিসের ব্যবস্থাপনা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করলে এবং তা কর্তৃপক্ষ জানতে পারলে আপনার ওপর প্রভাব পড়বে।
ক্যারিয়ার প্ল্যান: কাজ কিংবা ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, তা কেবল নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন। যতক্ষণ না অফিশিয়ারি কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তা নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করবেন না। এতে আপনার বর্তমান কর্মস্থলে যেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, একইভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগও নষ্ট হতে পারে। চাকরির পরিকল্পনাগুলো একান্তই নিজের মধ্যে রাখুন। এতে ক্যারিয়ারে আপনারই ভালো হবে। তবে যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন, তখন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিতে পারেন।