সেকেন্ড হ্যান্ড আইফোন কেনার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক
বর্তমান সময়ে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে তুমুল জনপ্রিয় ডিভাইস আইফোন। বাজারের সেরা ফোনগুলোর মধ্যে আইফোন উপরের দিকেই রয়েছে। প্রযুক্তি ভিত্তিক উন্নতির মাধ্যমে স্মার্টফোনের বাজারে ফোনটি আধিপত্য বিস্তার করেছে। তবে নতুন আইফোন কিনতে গিয়ে দামের কারণে পিছিয়ে আসতে হয় অনেককে। আবার অনেকের নতুন আইফোন কেনার সামর্থ্য না থাকলেও ব্যবহৃত আইফোন কিনে নিজের শখ পূরণ করেন।
পুরাতন ব্যবহৃত আইফোনের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সুবিধা
> প্রধান যে সুবিধাটি আপনি পাবেন সেটি হচ্ছে, একটি নতুন আইফোনের তুলনায় একটি ব্যবহৃত আইফোনের দাম তুলনামূলক অনেক কম। তবে এই দাম সাশ্রয় ডিভাইসের অবস্থা, বয়স, মডেল এবং অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।
> আপনি যদি বাজার থেকে কয়েক বছর আগে উঠে যাওয়া পুরোনো আইফোনের সন্ধান করেন, তাহলে ব্যবহৃত কিংবা সেকেন্ড-হ্যান্ড মার্কেট থেকে এটি কেনা ছাড়া আপনার আর কোনো গতি নেই। ধরুন আপনি এখন একটি নতুন আইফোন ১১ খুঁজছেন। সেক্ষেত্রে, এটি পাওয়া আপনার জন্য বেশ কঠিন হবে। আপনার একমাত্র রাস্তা হবে সেকেন্ড-হ্যান্ড সেট কেনা। আইফোন এক্স-এর মতো আকর্ষণীয় পুরোনো মডেলগুলোর ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।
> পুরোনো মডেলের আইফোনের মূল্য দীর্ঘদিন ধরে স্থির বা একই থাকে। অর্থাৎ, আপনি যে দামে ব্যবহৃত আইফোনটি কিনেছেন, কয়েক বছর পরেও দেখবেন সেকেন্ড-হ্যান্ড বাজারে এই মডেলটির মূল্য প্রায় একইরকমই। অথচ, নতুন ফোনের মোড়ক খুলে ব্যবহারের পরপরই ডিভাইসটি তার মূল্যের একটি বড় অংশ হারিয়ে ফেলে।
অসুবিধা
> মূল্য ছাড়ের কারণে বাজারে পুরোনো স্মার্টফোনগুলোর চাহিদা দীর্ঘদিন থাকে। তবে, নতুন কেনা ডিভাইসের তুলনায় আপনি যখন সেকেন্ড-হ্যান্ড আইফোনটি মার্কেটে বিক্রি করতে যাবেন, তখন এটির খুব বেশি মূল্য পাবেন না। এ ছাড়া ফোনটি বাজারে আসার পর অনেক বছর কেটে গেলে এটির প্রতি মানুষের আকর্ষণও কমে যাবে।
> সেকেন্ড-হ্যান্ড স্মার্টফোন কেনার একটি বড় নেতিবাচক দিক হলো ওয়ারেন্টি না থাকা। যদিও সেকেন্ড-হ্যান্ড বা প্রি-ওউনড বাজারের কিছু কিছু কোম্পানি এটি মোকাবিলার জন্য কিছু ওয়ারেন্টি দেয়। কিন্তু সেগুলো বেশিরভাগ সময়ই নতুন ডিভাইসে দেওয়া ওয়ারেন্টির তুলনায় সীমিত হয়।
> তবে আপনি যদি একটি অ্যাপল সার্টিফাইড রিফারবিশড আইফোন কিনে থাকেন, তাহলে এই সমস্যাটি এড়াতে পারবেন। কারণ, তারা আপনাকে একটি নতুন আইফোনের মতোই এক বছরের ওয়ারেন্টি দেবে।
> নতুন আইফোন কেনার ক্ষেত্রে আপনি সাধারণত একটি মডেলের বিভিন্ন রঙ এবং মেমরির বিকল্পগুলো পাবেন। কিন্তু আপনি যখন সেকেন্ড-হ্যান্ড বাজার থেকে কেনাকাটা করবেন, তখন আপনার পছন্দ শুধুমাত্র যা পাওয়া যায় তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
> সেকেন্ড-হ্যান্ড আইফোনগুলো আপনি মূল প্যাকেজিং বক্সসহ পাবেন এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। পেলেও সেটির ভেতরে অ্যাক্সেসরিজ বা আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র নাও থাকতে পারে। পুরোনো মডেলের আইফোনগুলোর ক্ষেত্রে চার্জার এবং চার্জিং ক্যাবল মূল প্যাকেজিং বক্সের সঙ্গেই পাওয়া যেত। সেক্ষেত্রে, আপনাকে এগুলো আলাদা করে কিনতে হতে পারে। অন্যদিকে, তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে আনুষঙ্গিক এসব জিনিসপত্র কেনা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
> অ্যাপল সাধারণত ৬ বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট মডেলের কোনো আইফোনের জন্য সফটওয়্যার সাপোর্ট দিয়ে থাকে। আপনি যদি ২, ৩ বা ৪ বছর আগে বাজারে আসা কোনো আইফোন কিনে থাকেন, তবে সেটির সফটওয়্যার সাপোর্টের দৈর্ঘ্য ইতোমধ্যেই অনেক কমে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ৩ বছর পুরোনো আইফোনের ক্ষেত্রে আপনি অ্যাপল থেকে আর ৩ বছর আইওএস আপডেট পাবেন।
> আইওএস আপডেট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেন না, এটি না হলে আপনি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা আপডেট এবং বাগ ফিক্সগুলো থেকে বঞ্চিত হবেন। এই কারণে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম প্রকাশিত আইফোন এক্স ২০২৪ সালে এসে কেনা বেশ ঝুঁকি। কারণ, অ্যাপল যেকোনো সময়ই এই মডেলের সফটওয়্যার সাপোর্ট বাতিল করতে পারে। এমনকি এটি আইওএস ১৭ সাপোর্ট করে এমন আইফোনের তালিকায়ও নেই।