যে কারণে ব্যালন ডি'অর পাননি ভিনিসিয়ুস
জোরালো গুঞ্জন ছিল ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ব্যালন ডি'অর জেতার। কিন্তু মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরস্কারটি পাননি রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এতে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে ফুটবল বিশ্বে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যালন ডি'অরের আয়োজক 'ফ্রান্স ফুটবল'-এর পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা করা হলো ভিনিসিয়ুসের না জেতার কারণ।
গতকাল সোমবার রাতে প্যারিসের থিয়েটার দু শাতলেতে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ফুটবলের সর্বোচ্চ সম্মাননাটি পেয়েছেন রদ্রি। ব্যালন ডি'অর জেতার পথে ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার হারিয়েছেন রিয়ালের তিন ফুটবলারকে। এবারের পুরস্কার পাওয়ার দৌড়ে যাকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখা হয়েছিল, সেই ভিনিসিয়ুস হয়েছেন দ্বিতীয়। ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহ্যাম তৃতীয় ও স্প্যানিশ ডিফেন্ডার দানি কারভাহাল চতুর্থ স্থান পেয়েছেন।
ভিনিসিয়ুস ব্যালন ডি'অর পাবেন না, এটা আগেই বুঝতে পেরেছিল গত মৌসুমে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা রিয়াল মাদ্রিদ। বেজায় ক্ষুব্ধ হওয়া স্প্যানিশ ক্লাবটি তাই বয়কট করে এবারের অনুষ্ঠান। তাদের কেউই প্যারিসে যাননি। ব্যালন ডি'অরের বিজয়ী নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলে তারা। শেষমেশ রিয়ালের ধারণাই সত্যি হয়। ভিনিসিয়ুসকে টপকে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন রদ্রি।
মঙ্গলবার ফরাসি ক্রীড়া দৈনিক লেকিপের সঙ্গে আলাপে সাময়িকী 'ফ্রান্স ফুটবল'- এর প্রধান সম্পাদক ভিনসেন্ট গার্সিয়া ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভিনিসিয়ুসের না জেতার। তার মতে, শীর্ষ পাঁচে রিয়ালের আরও দুই তারকা বেলিংহ্যাম ও কারভাহালের উপস্থিতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ভিনিসিয়ুসের ভোট প্রাপ্তিতে, 'গাণিতিকভাবে তারা (বেলিংহ্যাম ও কারভাহাল) কিছু পয়েন্ট নিয়ে গেছে (ভিনিসিয়ুসের কাছ থেকে)।'
গার্সিয়া যোগ করেছেন, 'এটা রিয়াল মাদ্রিদের (দুর্দান্ত একটি) মৌসুমের সারসংক্ষেপও বটে। তাদের তিন বা চার জন খেলোয়াড় বিশ্বের সেরাদের মধ্যে স্থান পেয়েছে। বিচারকরা নিজেদের ভোট তাদের (রিয়ালের খেলোয়াড়দের) মধ্যে ভাগ করে দিয়েছে। এতে মূলত রদ্রির লাভ হয়েছে।'
ব্যালন ডি'অর দেওয়ার জন্য ফরাসি সাময়িকী 'ফ্রান্স ফুটবল' এবার ২০২৩ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পারফরম্যান্সকে বিবেচনা করেছে। ছেলেদের বিভাগে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০০টি দেশের (৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশের আগে) একজন করে সাংবাদিক ভোট দিয়েছেন। প্রত্যেক সাংবাদিক ১০ জনকে বেছে নিতে পেরেছেন। সেই খেলোয়াড়রা ক্রমানুসারে ১৫, ১২, ১০, ৮, ৭, ৫, ৪, ৩, ২ ও ১ পয়েন্ট পেয়েছেন।
গার্সিয়া দাবি করেছেন, বিজয়ীর নাম আগে জানার জন্য রিয়ালসহ বিভিন্ন ক্লাবের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয়েছিল, 'রিয়াল মাদ্রিদের পাশাপাশি অনেক ক্লাবই তথ্য পাওয়ার জন্য আমাকে ভীষণ চাপ দিয়েছিল। তবে আমি সব সময় স্পষ্ট ও ন্যায্য ছিলাম। হয়তো আমার দৃঢ় নীরবতা থেকেই তারা (ফল অনুমান করে বয়কটের) এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বাকি ক্লাবগুলোর ক্ষেত্রেও আমি এমন (নিশ্চুপ) ছিলাম। তাদের (রিয়ালের) অনুপস্থিতি আমাকে বিস্মিত করেছে।'
গত মৌসুমে রিয়ালের হয়ে ভিনিসিয়ুস জেতেন লা লিগা, স্প্যানিশ সুপার কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। অন্যদিকে, ইংলিশ ক্লাব ম্যান সিটির জার্সিতে রদ্রি স্বাদ নেন প্রিমিয়ার লিগ ও ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপার। জাতীয় দল স্পেনের পক্ষে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফিও উঁচিয়ে ধরেন তিনি।