‘বিদ্বেষ ছড়িয়ে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চলছে’
দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অপপ্রচার, হুমকি ও হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিন্দুদের কয়েকটি সংগঠন। জাতীয় ঐক্য ও শান্তি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি বিভেদ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকার স্বামীবাগে ইসকনের প্রধান কার্যালয়ে সোমবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী। তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ইসকন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, গুজব ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক সংহতি নষ্ট করা।
তারা আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসকনকে 'জঙ্গি' ও 'উগ্রবাদী' সংগঠন হিসেবে মিথ্যাভাবে চিত্রিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইসকনের ভক্তদের ওপর সহিংস হামলার হুমকি, মন্দিরে হামলার ডাক এবং কর্মক্ষেত্রে হয়রানির মতো ঘটনাও ঘটছে।
চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী আরও বলেন, 'ইসকন একটি অরাজনৈতিক, মানবতাবাদী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যার ভিত্তি গৌড়ীয় বৈষ্ণববাদ। এটি শান্তি, অহিংসা ও আন্তঃধর্মীয় শ্রদ্ধাবোধের প্রচার করে। দশকের পর দশক ধরে ইসকন মানবজাতির সেবায় সহানুভূতি ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে আসছে। কিন্তু কিছু গোষ্ঠী নিজেদের হীনস্বার্থে এই ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।'
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো—সাম্প্রদায়িক উসকানিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, সব মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার এবং উসকানিমূলক অপপ্রচার ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কঠোর নজরদারি।
ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি শ্রীমৎ ভক্তি বিনয় স্বামী মহারাজ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এবং বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর।
Comments